দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৪১তম দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৭ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৯১ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৪ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন ২১ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ২১ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ২৬ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৯১ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১৯ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৯১০ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ২২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৮৪২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৩২৫ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৩ হাজার ৯১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলে ১ হাজার ৫১৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৪ লাখ ৪ হাজার ৯০২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ১৬ হাজার ৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৩২৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৭১২টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৪টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ২২৫ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৯১৪ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৩১১টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৪৪২ দশমিক ৬৯ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৯৫৮ দশমিক ৭৫ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৫ দশমিক ৩৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৭ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন, আর নারী ৩ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৬৩৫ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩৮৬ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৭ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের ২ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৪ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৭ জন; যা দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৩৭ জন; যা ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩০ জন; যা ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৪৭ জন; যা ১২ দশমিক ৪১ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫৮৫ জন; যা ২৬ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ১৪৬ জন; যা ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রাম রাজশাহী বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ১৪৬ জন; যা ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৮৯ জন; যা ১৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭৩ জন; যা ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৭৩ জন; যা ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০১ জন; যা ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫০ জন; যা ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৬৪ জন; যা ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২৫ জন; যা ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮০৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭১২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৫ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৯টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৪৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৮১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১১ জন ও শয্যা খালি আছে ২৮টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৪৯১ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭৭৩টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৫টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৪৪২ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ১৬৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৬২ জন এবং খালি আছে ৩০২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৭৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৬৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৮৯১ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৩১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৪৭ জন, রংপুর বিভাগে ২৪ জন, খুলনা বিভাগে ৩৯ জন, বরিশাল বিভাগে ২১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪১ জন, সিলেট বিভাগে ১০৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৭৬ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৫২ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৮৯৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৮১৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৭৯ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৯১৫ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭২৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৫৮ হাজার ২৩৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৬৭০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৯৩৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪৪ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৯৯৩টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৩৬ হাজার ৫৮৬টি কল এসেছে এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৭৮টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৮৫৭টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার ৯৫টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৫৪১ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ২৪ হাজার ১০ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৪ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ লাখ ৮ হাজার ৪৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ১৭১ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৪ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৬২ হাজার ৩০৪ জন এবং ১২ লাখ ১১ হাজার ৯৮৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
BSSN