দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৩৬তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৮১ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ২ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ২৩ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৮৮৬ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ২৬ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৮১ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৬২ জন কম সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২১ হাজার ২৮১ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ২৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৮১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১২ হাজার ৩৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৯৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১২ দশমিক ০৮ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৩ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৩ লাখ ১০ হাজার ৫৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৪ হাজার ৭৬০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৪৮ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৫০৬ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৫৪২টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১২টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ২৬৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৩৫৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৯১১টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৩৭৬ দশমিক ৬৬ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৮৮৬ দশমিক ৪৯ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৫৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২৫ জনের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন, আর নারী ৯ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৫২৯ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩৫৭ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২৪ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের ৯ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১১ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৯ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৬ জন; যা দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৩৪ জন; যা ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩২৫ জন; যা ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৩০ জন; যা ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫৫৮ জন; যা ২৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৬৪ জন; যা ৫২ দশমিক ০৬ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, সিলেট বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৫৩ জন; যা ৫১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৬৯ জন; যা ১৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭০ জন; যা ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৬৬ জন; যা ৭ দশমিক ৯২ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৯৯ জন; যা ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৪৫ জন; যা ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৬২ জন; যা ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২২ জন; যা ২ দশমিক ০৭ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৪৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭৭১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৬৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১১১ জন ও শয্যা খালি আছে ৭১৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৪ জন ও শয্যা খালি আছে ২৫টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৩৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭২৭টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৫ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৬টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৩৯৬ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ২১২টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৬৬ জন এবং খালি আছে ৩৯৮টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯০টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৭৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৬৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৫৪৮ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১৩৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯৪ জন, রংপুর বিভাগে ৪১ জন, খুলনা বিভাগে ২৭ জন, বরিশাল বিভাগে ১৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭৯ জন, সিলেট বিভাগে ৪৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৫১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৪৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৫ হাজার ৭৮৪ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৩ হাজার ৭৩৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৫১ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৮২৮ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬৪৬ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৩৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৬১৫ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৫টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৩৪ হাজার ৬৬৮টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৮৯টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪০ হাজার ৯৩২টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২১ লাখ ৮৭ হাজার ৭০৩টি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৫০২ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৩ হাজার ৯৩৯ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ লাখ ২০ হাজার ৯৯৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৪৯৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭১২ জন এবং ১১ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

BSSN

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে