ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা দেশের সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়ও সহায়তা প্রদান করছে।
তিনি বলেন, এছাড়াও এ বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন, সন্ত্রাস দমন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানসহ দেশগঠনমূলক কাজে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলেছেন।
‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০১৬’ উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ২২১ বছরের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ বাহিনীর সদস্যগণ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য এ বাহিনীর দু’জন সদস্য বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। ১১৯ জন সদস্য পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য খেতাব। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর ৮১৭ জন অকুতোভয় সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন।
জাতি বিজিবি’র এ আত্মত্যাগ সব সময়ই গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৮ সালে এ বাহিনী ‘স্বাধীনতা পদক’ লাভ করে।
আওয়ামী লীগ সরকার ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’কে একটি আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-২০১০’ প্রণয়ন ও কার্যকর করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে বিজিবি’র নতুন সাংগঠনিক কাঠামো ও জনবলের প্রাধিকার বৃদ্ধি, স্তর বিকেন্দ্রীকরণসহ পদবী কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বাহিনীর কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে ৪টি রিজিয়ন, ৪টি সেক্টর ও ১৫টি ব্যাটালিয়ন সৃষ্টি করা হয়েছে। বিজিবির নতুন সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী এ সকল নতুন ইউনিট স্থাপনের ফলে জনবল বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত বিজিবিতে ২২ হাজার লোক নিয়োগ দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিজিবি’তে প্রথমবারের মত নারী সদস্য এবং সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের মধ্য থেকে লোক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি’র নিজস্ব ডগ স্কোয়াড গঠন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার বিজিবি’র জন্য নতুন র‌্যাঙ্ক-ব্যাজ প্রবর্তন করেছে। সর্বনি¤œ পদ থেকে সুবেদার মেজর পর্যন্ত সদস্যদের জন্য সীমান্ত ভাতা, অগ্রিম বেতনসহ দু’মাসের ছুটি ভোগের সুবিধা, রেশন, চিকিৎসা ও আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বিজিবি সদস্যদের পারিবারিক বাসস্থানের সঙ্কট নিরসনে ঢাকার পিলখানাসহ অন্যান্য ব্যাটালিয়নে বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পদোন্নতিযোগ্য সদস্যদের পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিজিবির সার্বিক কল্যাণে নতুন নতুন পদক্ষেপ ও উপার্জনশীল প্রকল্প গ্রহণ ও পরিচালনার লক্ষ্যে বিজিবি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সীমান্ত ব্যাংক’ নামে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক স্থাপন এবং নিজস্ব এয়ার উইং সৃজন বিজিবি’র বিস্তৃত কাজের পরিধিকে আরো সুপ্রশস্ত করেছে। এ বাহিনীকে সর্বাধুনিক সীমান্ত রক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, এ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য দেশপ্রেম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে সততা, নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলার সাথে তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে পবিত্র আমানত মনে করে সীমান্তকে তারা সুরক্ষিত রাখবেন। দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদেরকে আরও নিবেদিত করবেন।
তিনি আমি ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-২০১৬’ দিবস উপলক্ষে এর সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য এবং এই বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে