সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকার: প্রতিদিনের মতো শশব্যস্ত হয়ে বসে আছেন এডিসি মহোদয়। দু’জনকে দেখেই বললেন, ‘আপনারা ফুটবলের লোক। এখানে এসে উপস্থিত হয়েছেন। যাক ভালোই হয়েছে। গতকাল (রবিবার) আমি একটি স্থানীয় পত্রিকায় দেখেছি। আপনাদের দু’জনের ছবি দেখেছি ও স্টোরি পড়ে জেনেছি। আমার মনে হয়েছে, কিছু একটা কথা বলবো। তাই আপনাদের ডেকেছি।’
সিরাজগঞ্জের খেলাধুলার আয়োজন ও বিভিন্ন পরিস্থিতি প্রেক্ষাপটের উপর দু’য়েকটা উপমা উদাহরণ টেনে কিছু কথা বললেন। সৌজন্য ও মতবিনিময় করলেন ঐ দু’জন সাবেক ফুটবল খেলোয়াড়ের সাথে। তিনি আশ্বস্থ হয়ে আরো বললেন, ‘যেকোনো মূল্যে সিরাজগঞ্জ ক্রীড়াঙ্গনে নিয়মিত খেলা হোক। এটা আমি দেখতে চাই। সবার সহযোগিতা চাই। খেলাধুলায় নানা পদক্ষেপ নিতে চাই। কি করলে ভালো হয় সেই বিশদভাবে ব্যাখ্যা দিলে। জানতে চাই দু’জনের কাছ হতে।’
শামস্ ফুটবল একাডেমীর পরিচালক ও সিরাজগঞ্জ মোহামেডান স্পোর্টিং সর্বপ্রথম অধিনায়ক এবং সিরাজগঞ্জ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ এমদাদুল হক এমদাদ কোন কিছু রাখ ঢাক না রেখে সোজা সাপ্টা জানিয়ে বলেন, ‘১৯৭৬ হতে ১৯৯২ পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ জেলার জন্য ফুটবল খেলা হতে আরম্ভ করে ঐ সিরাজগঞ্জ জেলা ফুটবল টিম ছিলো এবং আছে। উত্তরবঙ্গের যত জেলাগুলো আছে, ঐ সমস্ত জেলাগুলোর খেলোয়াড়েরা আমাদের দেখলে ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকতো। তারা আমাদের দলের খেলোয়াড়দের সমীহ করে চলতো। বিশেষ করে ঐ সময়কার ফুটবল খেলোয়াড় আমিসহ মান্নান, আঙ্গুর, বুলবুল, শামসু, কাইয়ুম, গোপালদা, শাহানুর, প্রিন্স, দিলীপ প্রভৃতি এরাই ছিলেন দুর্ধর্ষ ফুটবল খেলোয়াড়। ঐ সময়ে উপযোগী ভালো মানের ফুটবল খেলোয়াড় ছিলো। সবমিলিয়ে দলগঠনের মতো উল্লেখযোগ্য মজবুত ও শক্তিশালী দল হিসেবে বেশি পরিচিত ছিলো। দলগঠনে এতোটাই শক্তিতে ভরপুর ছিলো যেকোনো জেলা প্রথমে সিরাজগঞ্জ মহকুমা ও জেলা দলের বিপক্ষে পেরে ওঠতে পারতো না। শুধু তাই নয়, আমাদের সময় বাইরের খেলোয়াড়দের ডাকার কোন প্রয়োজন হয়নি। আমি মনে করি, সিরাজগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ একটি ফুটবল টিম। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’
ফুটবল ওস্তাদ রেজাউল করিম দিলীপ বলেন, ‘ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি যে, জেলা ক্রীড়া সংস্থায় যারা নির্বাহী কমিটিতে জড়িত ছিলেন। তারা ফুটবল খেলার ব্যাপারে বারংবার উদাসিনতার পরিচয় দিয়েছেন। অথচ দেখুন, আমাদের মাছুমপুর ক্রীড়া চক্রকে দেখুন। প্রতিবছর একের পর এক স্থানীয় ছোট ও বড় ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। নিয়মিতভাবে আমাদের মাছুমপুর মাঠে বহুবার ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়েছে। বুকে হাত রেখে বলতে পারি, উত্তরবঙ্গের সেরা ক্লাব আমাদের মাছুমপুর ক্রীড়াচক্র। আবার পাশাপাশি নতুন নতুন ফুটবল খেলোয়াড় তৈরিও করে দেয় মাছুমপুর ক্রীড়া চক্র। আমরাই চাই, সিরাজগঞ্জের ফুটবল মাঠে নিয়মিত খেলার আসর হোক।’
সবকথার এক কথার সাফ জানিয়ে এডিসি মুহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘সিরাজগঞ্জে একটার পর একটা ফুটবলসহ অন্যান্য খেলাধুলা হবে। খেলা সিরাজগঞ্জে হোক। এটাই আমি চাই। খেলাধুলা পরিচালনা করার জন্য যা যা করা দরকার, জেলা ক্রীড়া সংস্থার তরফে সম্ভাব্য সব ধরণের সহযোগিতা দেয়া হবে। কিন্তু খেলাধুলার বৃহত্তর স্বার্থে সকলের সহযোগিতার অভাব বড্ডো বেশি চোখে পড়ছে। আমরা এগিয়ে যেতে চাই সবাইকে নিয়ে একযোগে ক্রীড়াঙ্গনে নানা পরিকল্পনা ও ক্রীড়া আয়োজনের প্রতি মনোনিবেশ করতে চাই।
একটি সূত্র বলেছে, স্থানীয় জেলা ফুটবল লীগ খেলার ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি কামরুল হাসান হিলটন নিজেও খুব উৎসাহী। খেলা পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে তার যথেষ্ট ঝোঁক রয়েছে। বিশেষ করে ফুটবল ভেন্যু আনার দক্ষতা এই ডিএফএ’র সভাপতির রয়েছে। এখন প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে