ডেস্ক রিপোর্ট : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। এ উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।রবীন্দ্র-জন্মবার্ষিকীর এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়- ‘মানুষের ধর্ম : রবীন্দ্রনাথ ও সমকালীন প্রাসঙ্গিকতা’।অনুষ্ঠনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সভাপতিত্ব করেন।এতে মূল বক্তা হিসেবে সমকালীন প্রাসঙ্গিকতায় ‘রবীন্দ্রনাথের নৃত্যভাবনা’ নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিত রবীন্দ্র অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখার্জী।
সংগীত বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন টুম্পা সমাদ্দার স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

সূচনা বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মনুষ্যত্ববোধ ও মানবতাবোধের মূল্যবোধ বিবেচনায় রবীন্দ্রনাথ সর্বকালের প্রাসঙ্গিকতায় আমাদের প্রাণিত করেন। বিশ্বজনীনতায় রবীন্দ্রনাথ সর্বব্যাপী উদ্বুদ্ধ ও উজ্জ্বীবিত করে চলেছেন। রবীন্দ্রনাথের চৈতন্যে বাঙালি জাতির মানস কাঠামো গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথের রচনা। রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিক পরিম-লে প্রাসঙ্গিক না হলে তা হতো না। রবীন্দ্রনাথ তার সকল কর্মে মানবতাবোধের নিদর্শন রেখে গেছেন। সুস্থ সংস্কৃতি ও মানবিক জীবনের স্থিরতার জন্যে, সৃষ্টিশীলতার জন্যে আলোর পথে যাত্রা করতে হলে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মানবতাবোধের চেতনা ধারণ করে মানবতার আদর্শে গড়ে উঠতে হবে। রবীন্দ্রনাথের আদর্শ গ্রহণ করলে কোনো মানুষ অত্যাচার করবে না, সহিংস হবে না, দুর্নীতি করবে না, সে সত্যের প্রতি অবিচল থাকবে।
উপাচার্য আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মনুষ্যত্বের বিকাশ। রবীন্দ্রনাথ তার জীবদ্দশায় অন্যায়-অনাচারের প্রতি কখনো আপস করেননি। তিনি সে সময় ব্রিটিশদের সঙ্গে আপস না করার কারণে ব্রিটিশদের দেয়া নাইট উপাধিও ফেরত দিয়েছিলেন। প্রকৃত মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে রবীন্দ্রমনস্ক হওয়া উচিত। জ্ঞান অর্জনের জন্য রবীন্দ্র জগতে প্রবেশ করলে প্রজ্ঞাবান মানুষ তৈরীর সমস্ত উপাদান পাওয়া যাবে। রবীন্দ্র রচনা সমগ্রে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপের জীবনাচার ও প্রকৃতির অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে।

অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখার্জী মূল প্রবন্ধে বলেন, রবীন্দ্রনাথ তার সাহিত্যে শিক্ষা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন করেছেন। এজন্য তিনি বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ নিজে নৃত্যবিশেষজ্ঞ না হলেও তার নৃত্যনাট্যে দেশীয় ও বিদেশি নৃত্যের সমন্বয় ঘটেছে। তিনি নৃত্যকলার পাশাপাশি চিত্রকলাতেও ভূমিকা রেখেছেন। নৃত্যকলা ও চিত্রকলা যে একে অপরের পরিপূরক এটি রবীন্দ্রনাথ বিভিন্ন সাহিত্যকর্মে উল্লেখ করেছেন। নৃত্যকলাকে তিনি নাগরিক সমাজে প্রতিষ্ঠা করেছেন। পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ এবং নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করে।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে