মোঃ আসাদুজ্জামান পাভেল, ডিমলা (নীলফামারী) থেকেঃ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিক ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী দুইটিতে বিজয়ী হয়েছে। রবিবার (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ভোট গ্রহনের পর রাত সাড়ে ১০টায় ডিমলা উপজেলা পরিষদের হল রুমে আনুষ্ঠানিকভাবে বেসরকারীভাবে ফলাফল ঘোষনা করা হয়।

বেসরকারীভাবে ভোটের ফলাফল ঘোষনা করেন টেপাখাড়িবাড়ি ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের রির্টানীং কর্মকর্তা ডিমলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার দাস ও খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের রির্টানীং কর্মকর্তা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার রাজিউর রহমান।

ঘোষিত ফলাফলে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে নৌকা প্রতিকের ময়নুল হক ৫ হাজার ৯৬৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি ছিলেন আনারস প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রবিউল ইসলাম শাহিন। তিনি ভোট পান ৪ হাজার ৮৯৩।খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে চশমা প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন ৪ হাজার ৪২৭ ভোট পেয়ে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি নৌকা প্রতিকের জাহাঙ্গীর আলম ভোট পায় ৩ হাজার ৮১৮।

গয়াবাড়ী ইউনিয়নে আনারস প্রতিকের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সামছুল ইসলাম ৭হাজার ২৪১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি নৌকা প্রতিকের শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন ভোট পান ৪ হাজার ৫৬৮। নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান সামছুল ইসলাম সংবাদকর্মীদের বলের জনগণ আমাকে চেয়েছেন তাই আল্লাহ আমাকে সম্মান দিয়েছেন তাই যে যতই চেষ্টা করুক আমার বিরুদ্ধে আমি জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত জনগনের সেবা করে যাব।

সুত্র মতে, তিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ১২জন, সাধারন সদস্য পদে ৯০ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৩১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছে। এদের মধ্যে খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, সাধারন সদস্য পদে ৩৪ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১জন, টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২জন, সাধারন সদস্য পদে ২৮জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৬জন, গয়াবাড়ী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩জন, সাধারন সদস্য পদে ২৮জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করে।

সকালের দিকে খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি ও টেপাখড়িবাড়ি এই ৩ ইউনিয়নের ছিটমহলের ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। এ সময় কথা হয় উৎসুক জনতার সঙ্গে তারা বললেন জীবনের প্রথম ভোট দিলাম। কি যে আনন্দ লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। তারা বললো নির্বাচন ও ভোট কি তা আমরা আগে জানতাম না। বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়েছেন। তিনি আমাদের জগত জননী। তার কারনে আজ আমরা জীবনের প্রথম ভোট প্রদান করলাম। এখন বুঝলাম ভোটের কি মূল্য। আমরা খুব খুশী।

খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ২৮ নম্বর সাবেক ছিটমহল বড় খানকি এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে মুরগা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন মোঃ আজিদুল ইসলাম তিনি ৫৮৩ ভোট নিয়ে বিজয়ী হন।এর পক্ষে ছিটমহলের জনগণ বলেন, ‘কষ্টের মধ্যে ছিলাম আমরা। এহন সরকার ভোট দিছে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দী করার অধিকার দিয়েছেন আমগো খুব ভালো লাগছে।

অপর দিকে গয়াবাড়ি ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডে সঙ্গে যোগ হয় ২৯ নম্বর সাবেক ছিটমহল নয়াবাংলা। এলাকার ভোটার জানালেন জীবনের ভোট দিতে পেরে স্বার্থকতা খুঁজে পেলাম। এই স্বার্থকতার জন্য বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা ছিটবাসী চিরকৃতজ্ঞ।

এ দিকে সারাদিন ব্যাপী শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় অসংখ্য আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনী র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও গণমাধ্যমকর্মী সার্বক্ষনিক নির্বাচনী এলাকায় তৎপর ছিল। তবে ৩ ইউনিয়নের নির্বাচনী কাজের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা বে-সরকারী ভাবে ফলাফল দেওয়ার পরে প্রার্থীর সমর্থক গোষ্টি নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যান আনন্দ উল্লাস করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে