ডেস্ক রিপোর্টঃ ঢাকা উত্তর সিটি করর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক গুলশান-১ নম্বর ডিএনসিসি মার্কেটের অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
মেয়র বলেন, ডিএনসিসি মার্কেটের অগ্নিকান্ডের ঘটনার তদন্ত চলছে। এ সময় নানা অপপ্রচার সুষ্ঠু তদন্তের ব্যাঘাত ঘটাবে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সুষ্ট, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে অগ্নিকান্ডের ঘটনার মূল কারণ বেরিয়ে আসবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত গুলশান সেন্টার পয়েন্টে অগ্নিকান্ডের পরবর্তী ঘটনা বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ অভিযোগ ও আশা প্রকাশের কথা বলেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
ডিএনসিসি’র মেয়র বলেন, তদন্ত পরবর্তী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ডিএনসিসি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে থেকে তাদের স্বার্থরক্ষা করবে। এ জন্য তিনি ডিএনসিসি’র উপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান।
ডিএনসিসি’র এ প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসি’র চীফ এক্রিকিউটিভ অফিসার (সিইও) মেজবাউল ইসলাম সালেহ, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সালেহ উদ্দিন, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া, স্থানীয় ডিএনসিসি কাউন্সিলর মফিজ ও কাউন্সিলর সেন্টু মিয়াসহ ডিএনসিসি’র অন্যান্য কাউন্সিলর, সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর, ব্যবসায়ী নেতা শের মোহাম্মদ ও আক্তারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র আনিসুল হক জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া ডিএনসিসি মার্কেটের কাঁচাবাজারের ভবনটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বহু ব্যবসায়ী সর্বশান্ত হয়েছেন। আগামী কয়েক বছরেও তাদের এ ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। তাই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ডিএনসিসি’র হাত প্রসারিত থাকবে।
ডিএনসিসি ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ নয় উল্লেখ করে মেয়র বলেন, তার বিশ্বাস এ ধ্বংসস্তুূপের মধ্য থেকেই ব্যবসায়ীরা আবার জেগে উঠবে।
প্রতিনিয়ত শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ও বাসা-বাড়িতে আগুন লাগছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি আমাদের জন্য বিরাট একটি অশনি সংকেত। তবে শহরকে জ্বলতে দেয়া যাবে না। শহরের প্রতিটি বাড়ি-কর্মসংস্থানকে নিরাপদ করতে হবে।
মেয়র বলেন, আর এটি করতে গিয়ে যদি ব্যবসায়িক স্বার্থ ত্যাগ করতে হয়, বৃহত্তর স্বার্থে আবাসনের এ জায়গাটিকে যদি সংস্কার করতে হয় বা পরিত্যাগ করতে হয়, তাহলে তা-ই করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ডিএনসিসি’র বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠা কাওরানবাজারসহ ৭টি মার্কেট এখনও বেশ বিপদজনক ও ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় এসব মার্কেট ধসে পড়তে পারে। এ জন্য ব্যবসায়ীদেরকে আরো বেশি সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিএনসিসিতে দোকান তৈরির বিকল্প জায়গা নেই। বিকল্প জায়গা আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। গুলশান এলাকায় ২ কাঠা জমিও পাচ্ছি না।
ডিএনসিসি মার্কেটের অব্যবস্থাপনা ও ফুটপাত প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, সম্প্রতি ডিএনসিসি আদালতের রায় পেয়েছে। এখন উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারব। গত ১ বছরে ডিএনসিসি’র পক্ষ থেকে ১ হাজার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আনিসুল হক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, অগ্নিকান্ডের বিষয় নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেছেন ও কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলে সঠিক সিদ্বান্ত নিতে। ঝগড়া দিয়ে কখনও কোন কিছুর সমাধান হবে না বলেও তিনি জানান।
সাংবাদিকদের সাথে প্রেসব্রিফিংয়ের পর মেয়র আনিসুল হক ডিএনসিসি’র আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী নেতা ও দোকান মালিকদের সাথে পৃথক একটি বৈঠক করেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে