ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশ ছোট একটি দেশ হলেও এখানে রয়েছে খাবারের নানা বৈচিত্র্য। একেকটি এলাকা ভেদে একেক রকমের খাবারের প্রচলন রয়েছে। যেমন সিলেটের খাবারে সাতকড়া বা খুলনায় চুই ঝাল ব্যবহারের প্রচলন থাকলেও, অন্যান্য এলাকায় সেটি নেই। আবার অনেক এলাকায় রয়েছে নিজেদের ধরণে জনপ্রিয় ও প্রচলিত খাবার।

কুড়িগ্রামের ক্ষীরমোহন

কুড়িগ্রাম জেলার একটি উপজেলা উলিপুর এখানকার বিখ্যাত “পাবনা ভাগ্যলক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার” এর- তৈরিকৃত ” ক্ষীরমোহন ” ।

এই ছবিটি পাঠিয়েছেন লিটন কুমার মোদক। তিনি এর নির্মাণ প্রনালীও পাঠিয়েছেন। এটা উলিপুরের ঐতিহ্যবাহি খাবার। আশপাশের জেলা ছাড়াও ঢাকায় ব্যাপক চাহিদা।

প্রথমে ক্ষীরমোহনের জন্য তৈরিকৃত মিষ্টি চিপে রস বেড় করে রাখা হয়।

তারপর দুধ কে জ্বাল দিয়ে ঘন ক্ষীর তৈরি করে চিপে রাখা মিষ্টি দিয়ে অল্প কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হয় তারপর নামানোর আগে বড় এলাচের গুড়া এবং তেজ পাতা দিতে হয়।

খুলনা অঞ্চলের চুই ঝাল

খুলনা অঞ্চলের মাংস রান্নায় চুই ঝাল নামের একপ্রকার গাছের ব্যবহার রয়েছে।

ওয়ারিশা মাহি লিখেছেন, মাংস ধুয়ে নানারকম মসলা মাখিয়ে সেদ্ধ করতে হয়। একপর্যায়ে সেই মাংসের সঙ্গে চুই ঝাল মিশিয়ে দিয়ে খানিকক্ষণ ভুনে নিতে হয়।

মুক্তাগাছার মণ্ডা

ময়মনসিংহের মুক্তগাছা এলাকার একপ্রকার মিষ্টি হচ্ছে মণ্ডা। দুধ ও চিনি দিয়ে মণ্ডা তৈরি করা হয়।

এ নিয়ে একটি গল্পও রয়েছে।

প্রায় দুইশো বছর আগে মুক্তাগাছার একজন মিষ্টির কারিগর স্বপ্নে নির্দেশনা পান যে, কিভাবে মণ্ডা তৈরি করতে হবে। সেই অনুযায়ী তিনি চুল্লি খনন করে মণ্ডা তৈরি করেন। এভাবে মুক্তাগাছার মণ্ডার যাত্রা শুরু।

চট্টগ্রামের মেজবানির মাংস

চট্টগ্রামের বড় ধরণের খাবারের আয়োজনকে বলে মেজবান আর সেই আয়োজনের মাংসের রয়েছে আলাদা ধরণের রন্ধন রীতি। তাকে বলা হয় মেজবানির মাংস।

বিয়ে, জন্মদিন, মৃত্যুবর্ষিকী, ব্যবসায় উন্নতি, নতুন ব্যবসা, আকিকা ইত্যাদি নানা উপলক্ষ্যে মেজবানের আয়োজন করা হয়।

সাধারণত গরুর মাংস দিয়ে মেজবানির মাংস রান্না করা হয়, যেখানে নানা ধরণের মসলা ব্যবহার করা হয়।

কুমিল্লার বিখ্যাত রসমালাই

ধারণা করা হয়, উনিশ শতক থেকে কুমিল্লা শহরে এই রসমালাই বিক্রি করা শুরু হয়। মনোহরপুরের মাতৃভাণ্ডার নামের একটি দোকানে এই রসমালাই তৈরি হতো।

সিলেটের সাতকড়া

সিলেটের মাংস রান্নার একটি জনপ্রিয় অনুসঙ্গ সাতকড়া।

অনেকটা লেবু জাতীয় এই ফলটি মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে রান্না করা হয়। সিলেটের বাসিন্দাদের কাছে এর জনপ্রিয়তা এতো বেশি যে, এখন বাণিজ্যিকভাবে সাতকড়ার চাষ করা হচ্ছে এবং বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে।

বরগুনার চালের রুটি

অতিথি এলে বা বিশেষ বিশেষ উৎসবে চালের রুটি বরগুনার বাসিন্দাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। নতুন ফসল উঠলেও চালের রুটি তৈরি করা হয়। গরু বা মুরগির মাংসের সঙ্গে সাধারণত চালের রুটি খাওয়া হয়ে থাকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পেঁচানো জিলাপি

জিলাপি এমনিতে পেঁচানো হলেও বিশেষ প্রক্রিয়ায় এবং খানিকটা আলাদাভাবে এই পেঁচানো জিলাপি তৈরি করা হয়।

আরো যেসব জনপ্রিয় ও নামকরা খাবার রয়েছে:

  • বগুড়ার দই
  • নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি
  • ফরিদপুরের বিখ্যাত খেজুরের গুড় ও বিভিন্ন ধরনের পিঠা।
  • নাটোরের কাঁচাগোল্লা
  • টাংগাইলের চমচম
  • শেরপুরের অনুরাধার ছানা পায়েস
  • মহেশখালীর মিষ্টি পান
  • বরিশালের পেয়ার আমড়া ইলিশ
  • পুরান ঢাকার বাকরখানি

সূত্র: বিবিসি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে