ডেস্ক রিপোর্টঃ রাজধানীর জিগাতলায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি হাতে হামলা চালিয়েছে একদল যুবক। এসময় তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছুড়েছে। এই যুবকদের মাথায় হেলমেট ছিল। এ সময় দুই পক্ষকে ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

সকাল থেকে ওই এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নেয়। বেলা দুইটার দিকে বিজিবি গেটের সামনে শত শত শিক্ষার্থীর একটি অংশের ওপর হঠাৎ করে হেলমেট পরা, লাঠি হাতে ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল যুবক হামলা চালায়। বিজিবির সদস্যরা গেট থেকে সামনে এসে যুবকদের থামানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী ও হামলাকারীরা একে অপরের দিকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সময় সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের কোনো ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীরা জানায়, সকালের দিকে তারা সীমান্ত স্কয়ারের একপাশে জড়ো হতে চাইলে সেখানে লাঠি হাতে ধাওয়া দেয় একদল লোক। ধাওয়ার খবরে আন্দোলনকারীরা অন্যান্য স্পট থেকে সীমান্ত স্কয়ারের সামনে জড়ো হয়।

আন্দোলনকারীদের ধাওয়া ও মারধরের অভিযোগে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ধানমন্ডি ৩ নম্বরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দিকে এগুতে থাকে। এ সময় ওই পক্ষ শিক্ষার্থীদের আবারো ধাওয়া দেয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনাও ঘটে। ওই যুবকদের ধাওয়ায় শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে এসে আবারও সীমান্ত স্কয়ার এলাকায় অবস্থান নেয়। এতে দুইপক্ষের মধ্যে মারমুখী অবস্থান তৈরি হয়।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহন লিমিটেডের একটি বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে। এর মধ্যে বুধবার (১ আগস্ট) বিকেলে বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপরও বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে। শুক্রবার ছুটির দিনেও তারা রাস্তায় নামে। এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনের লাইসেন্স, ফিটনেস মেয়াদ ও চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করে।

এর মধ্যে নিহত দুই পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও। দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসের পরও শিক্ষার্থীরা শনিবার সপ্তম দিনের মতো রাস্তায় নামে।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের মধ্যে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) থেকে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন ও দূরপাল্লার যানবাহন। চালক-শ্রমিকরা বলছেন, সড়ক নিরাপদ না হলে তারা রাস্তায় গণপরিবহন চালাবেন না।

K/K/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে