ডেস্ক রিপোর্টঃ জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বা জোটগতভাবে নির্বাচনের অংশ নেওয়া থেকে দূরে রাখার কোনো আইন নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতসহ কোনও যুদ্ধাপরাধীর পরিবারের কেউ স্বতন্ত্রভাবেও যেন অংশ নিতে না পারে সে দাবি জানাতে মঙ্গলবার কমিশনে সাক্ষাৎ করতে যান ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বে ৮ সদস্য।

এর জবাবে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা তাদের দাবিগুলো আমাদের জানিয়েছেন। জামায়াত, যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি আইন-কানুন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমরা অবহিত করব। এছাড়া আরপিও সংশোধনের বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কোনো আইন নেই।

ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি তো রাজনৈতিক দল নয়, তাহলে তাদের সঙ্গে আলোচনা কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, যেকোনো সংগঠন আলোচনার জন্য সময় চাইলে, সিইসি সময় দিলে, আলোচনা করা যেতে পারে। তারাও তো ভোটার। ভোটাররাও তো আমাদের স্টেকহোল্ডার।

ইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি।

কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির সাংবাদিকদের বলেন, শুধু জামায়াতে ইসলামী নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, জঙ্গি, সন্ত্রাসী সংগঠনও যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। এক্ষেত্রে হেফাজতে ইসলামও যদি নির্বাচনে অংশ নেয়, তারা যে সন্ত্রাসী সংগঠন তা আমরা চ্যালেঞ্জ করতে পারব।

এ বিষয়ে অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, আমরা তিনটি দাবি জানিয়েছি। প্রথমত জামায়াতসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো দল বা ব্যক্তি যেন নির্বাচনের সুযোগ না পায়। এজন্য প্রার্থীর কাছ থেকে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর নেওয়া যে তিনি কোনও সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, স্বাধীনতাবিরোধী নন, আদালতের রায়ে নিবন্ধন বাতিল হওয়া বা নির্বাচনের অযোগ্য কোনও দলের সদস্য নন বা সম্পৃক্ত নন।

এরআগে বেলা ১১টায় আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে বৈঠকে বসেন এ কমিটি।

ইসির কাছে কমিটির পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ঝুঁকিপূর্ণ সব নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হুমকি প্রদানকারীদের শাস্তির আওতায় আনা; জামায়াতের অনুসারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলকে ঘোষণা করতে হবে যে, তাদের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই; নির্বাচনের সময় মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিরোধী এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ প্রচারকারীদের শাস্তির আওতায় আনা; ‘৭১-এর গণহত্যাকারীদের সন্তান বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য, যারা সর্বোচ্চ আদালতের রায় অগ্রাহ্য করছেন, তাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য ঘোষণা এবং সেনাবাহিনীকে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করলে তাদের অন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে বলে দাবিতে জানানো হয়।

কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে আরও জানানো হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৯২টি নির্বাচনী এলাকায় সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভোটের সংখ্যা ১২ থেকে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত। যার বেশিরভাগ ঝুঁকিপূর্ণ।

J/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে