চা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, এক সময় চা ছিল আমাদের অন্যতম রপ্তানি পণ্য। পরবর্তীতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ায় চা রপ্তানি কমে গেলেও সরকার চায়ের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

শুক্রবার (৩ জুন) ‘জাতীয় চা দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।

শনিবার (৪ জুন) দেশে দ্বিতীয়বারের মতো ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে চা শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, সরকার ২০১৭ সালে চা শিল্পের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘উন্নয়নের পথ নকশা: বাংলাদেশ চা শিল্প’ অনুমোদন দেয়। সরকারের নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ২০২১ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ (৯৬.৫১ মিলিয়ন কেজি) চা উৎপাদিত হয়েছে।

চা শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে জানিয়ে মো. আবদুল হামিদ বলেন, চা শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বাসস্থান, শৌচাগার ও নলকূপ স্থাপন, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা, বাগানের নারী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন এবং বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের কারণে বৃহদায়তন চা বাগানের পাশাপাশি সমতলেও চা চাষে বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে।

‘সুদীর্ঘ ১৮০ বছর ধরে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে চা শিল্প গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদনের মাধ্যমে দেশে চা শিল্পের যাত্রা শুরু হয়।’

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান। তিনি ৪ জুন ১৯৫৭ থেকে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ পর্যন্ত চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে চা শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।’

‘বঙ্গবন্ধু মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত টি রিসার্চ স্টেশনে ল্যাবরেটরি ও লাইব্রেরি স্থাপনের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম জোরদারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।’

‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত চা বাগান পুনর্বাসনে আর্থিক সহায়তা প্রদান ও অবকাঠামো উন্নয়নে পদক্ষেপ নেন। এ প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেওয়ার তারিখ ৪ জুন জাতীয় চা দিবস পালনের উদ্যোগ বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।’

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যাত্রায় চা শিল্পের অবদান আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চা বোর্ডসহ চা শিল্প সংশ্লিষ্ট সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় ‘জাতীয় চা দিবস ২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন তিনি।

Jag/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে