মাফি মহিউদ্দিন, কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ  দেশে দিন দিন বেড়েই চলেছে শিক্ষিতের হার। কিন্তু সে হারে বাড়ছেনা কর্মক্ষেত। ফলে অনেকেই বেকার থেকে যাচ্ছে। চাকুরী যেন সোনার হরিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে 
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার  চাঁদখানা বুড়িরহাঁট এ ইউ দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং চাঁদখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফি মাদ্রাসার বিভিন্ন পদে নিয়োগের কথা বলে প্রতারণা করে  দশ থেকে পনের জন চাকুরীপ্রাথর্ীর কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা আত্নসাৎ করেছেন।  
এ ঘটনায় প্রতারণার স্বীকার চাকুরী প্রার্থী  কয়েকজন নারী পুরুষ এবং চেয়ারম্যানের আপন বোন ছালেহা বেগম  টাকা উদ্ধারের দাবিতে  পৃথক পৃথক ভাবে  উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ ও জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।  
লিখিত অভিযোগ এবং সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা এ ইউ দাখিল মাদ্রাসায় বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য গত ৩/১২/২০১৮ ইং তারিখ একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপি প্রকাশের পর মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং চাঁদখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফি বিভিন্ন চাকুরী প্রাথর্ীকে মাদ্রাসায় নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে প্রায় দশ থেকে পনের জন চাকরী প্রাথর্ীর কাছ প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা আত্নসাৎ করেন।
চাঁদখানা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিধবা ছালেহা বেগম বলেন, ৫ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে, আমার তিন মেয়ে দুই ছেলে। স্বামীর মৃত্যুর পর অনেক কষ্টে এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছি। চাঁদখানা এ ইউ দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগের কথা শুনে মাদ্রাসার নিরাপত্তা কমর্ী পদে আমার ছেলে ফিরুতকে ওই পদে  নিয়োগের জন্য মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং চাঁদখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফিকে দুই লাখ টাকা প্রদান করি। 
কিন্তু সভাপতি আরো বেশি টাকা নিয়ে অন্য প্রাথর্ীকে ওই পদে নিয়োগ দেন। পরে আমি টাকা ফেরৎ চাইলে সে টালবাহানা শুরু করে। পরবতর্ীতে টাকা উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেই।  ছালেহা ছাড়াও  দপ্তরী পদে আরিফুর রহমানের কাছে ৩ লাখ টাকা, নিরাপত্তা কমর্ী পদে মাহবুবার রহমানের কাছে এক লাখ, নৈশ প্রহরী পদে রফিকুল ইসলামের কাছে এক লাখ, নৈশ প্রহরী পদে বিলু মিয়ার কাছে ৩ লাখ, এবং একই পদে আলমগীর হোসেন নামে একজনের কাছে ৫০ হাজার টাকা সহ দশ থেকে পনের জন প্রাথর্ীর কাছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা আত্নসাৎ করেন।
মাদ্রসা সুপার আবু বক্কর সিদ্দিকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, মাদ্রাসায় বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর তিনটি পদে মোট ২০ জন প্রাথর্ী আবেদন করে। গত ২৪-১০-২০২০ ইং তারিখ তিনটি পদের পরীক্ষা সৈয়দপুর কারিগরী সরকারী কলেজে অনুষ্টিত হয়। ওই তিন পদে তিন প্রাথর্ীর নিয়োগের পর জানতে পারি সভাপতি সব প্রাথর্ীর কাছ থেকে নিয়োগের জন্য টাকা নিয়েছে। 
চাঁদখানা এ ইউ দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং চাঁদখানা ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফির সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, যারা আমার নামে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছে  তারা কি কোন ডকুমেন্ট দিতে পারবে। কিশোরগঞ্জ উপজেলার সকলে এ ধরনের অভিযোগ করতে পারে। 
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতার্ এটি এম নুরুল আমিন শাহ লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, নিয়োগের বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। লিখিত অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে নানা অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।  এছাড়াও নৈশ প্রহরী হিসাবে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাঁর জম্ন নিবন্ধন সনদ জাচাই করে দেখা গেছে ওই প্রাথর্ীর বয়স ৪২ বছর। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর বেশি কিছু বলতে পারবনা। 
উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ রোকসানা বেগম বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহন করব। 
জেলা শিক্ষা কর্মকতার্ শফিকুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।  সাথে ছবি আছে 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে