মারুফ সরকার, বিনোদন ডেস্কঃ বাংলাদেশে অনেক ভালো  পরিচালক, স্ক্রিপ্টরাইটার, ক্যামেরাম্যান, টেকনিশিয়ান, নৃত্য পরিচালক সবই আছে তবুও কলকাতা থেকে নিয়ে এসে কাজ করতে হবে কেন? আমাদের দেশে যথেষ্ট  ‘ভালো’ কলাকুশলী আছেন, যারা কলকাতার চেয়ে ভালো সিনেমা তৈরি করেন। এমনকি তাদের থেকে ‘উত্তম’ কাজ করার পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন।কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তাদেরকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কলকাতার শিল্পীরা এদেশে কেন আসে? শুধুই শিল্পের খাতিরে?

নাকি সে দেশে তাদের কাজ নেই এ কারণে? অথচ কী নির্মম সত্য জানেন, সেই তাদেরই আমরা ‘স্যার স্যার’ সম্বোধন করে ‘সম্মান’ দেই। মাথায় করে রাখি।এদিকে আমাদের দেশের শিল্পীরাও বদলে গেছেন।আমাদের পরিচালকদের সকালের সিডিউল দিয়ে আসেন বিকালে। শিল্পীদের ভেতর থেকে ভক্তি-শ্রদ্ধাবোধটা একপ্রকার উঠেই গেছে। আর একারণে আজ চলচ্চিত্রের এ অবস্থা।আগের প্রযোজকরা পরিচালকের উপর নির্ভর করতেন। এখন প্রযোজকেরা নিজেরাই নায়ক-নায়িকা ঠিক করে দেন পরিচালককে। এতে করে ছবির মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এখনকার প্রযোজকেরা সিনেমা বানানোর জন্যে আসেন না। একারণে চলচ্চিত্রের বেহাল দশা। আমরা চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থার জন্য নিজেরাই দায়ী।

আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন এক সময়ের ব্যস্ত নৃত্য পরিচালক সাইফুল ইসলাম।সিনেমা শিল্প এখনও ‘পুরোপুরি’ ধ্বংস হয়নি। আছে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায়। পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশের তিন শতাধিক ও কলকাতার অর্ধশত সিনেমার গানের এই কোরিওগ্রাফার বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে শিল্পীদের ব্যবহার করা হচ্ছে না। শিল্পীদের বয়স হলে তাদের কেন্দ্র করে কোনো গল্প লেখা হচ্ছে না। আমাদের দেশে এখনো যারা আছে তাদের দিয়ে ছবি বানালে চলচ্চিত্র শিল্প আবার ঘুড়ে দাঁড়াবে-এ বিশ্বাস শুধু আমার নয়, একাধিক চলচ্চিত্রজনের। এখনো যদি মূলধারার গল্প দিয়ে আমিন খান, রিয়াজ, বাপ্পারাজ, শাবনূর, পূর্ণিমা ও মৌসুমীকে নিয়ে ছবি বানানো হয়, তা দর্শক সাদরে গ্রহণ করবে।তিনি আরো বলেন, বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে এখন অনেক কষ্ট লাগে।

আমরা যে সময় কাজ করতাম তখন শিল্পীরা নৃত্য পরিচালকদের সালাম করতেন।এখনকার সময় তা আর কেউ করেন না। শিল্পীদের এমন আচরণ আজ আমাদের মনে কষ্ট দেয়। কিন্তু সেই চাপা কষ্টের আওয়াজ কারো কানে পৌঁছায় না। দেশীয় চলচ্চিত্রে আজ অনেক ‘চরিত্র’ হারিয়ে যাচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, হ্যাঁ বিষয়টি কষ্টের। এখন তো প্রায়ই সিনেমায় মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-ভাবী চরিত্রগুলো দেখাই যায়না। হারিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য সাইফুল ইসলাম বাংলা ও কলকাতাসহ প্রায় ৪’শ সিনেমায় কোরিওগ্রাফি করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে ” সব সখিরে পার করিতে নেব আনা আনা ” ‘” তুমি ডুব দিও না” পৃথিবীর যত সুখ ” সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানে কোরিওগ্রাফি হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে