করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চট্টগ্রামে আগামি রোববার ৫ লক্ষাধিক ডোজ টিকা পৌঁছাবে। নগরী ও জেলার অগ্রাধিকার তালিকাভুক্তদের মাঝে এই টিকা প্রদান করা হবে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি একথা জানিয়েছেন।
তিনি আজ বাসসকে জানান, চট্টগ্রামে আসার পর এসব টিকা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই স্টোরে রাখা হবে। বস্তুতপক্ষে ইপিআই কর্মসূচির মতো করেই করোনার টিকা প্রদান কর্মসূচিও পরিচালিত হবে। চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে এবং উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও’র তত্ত্বাবধানে টিকা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। রেজিস্ট্রেশনের হিসাব মতে চাহিদা অনুযায়ী ইপিআই স্টোর থেকে সিটি কর্পোরেশন এবং উপজেলা পর্যায়ে টিকা সরবরাহ করা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘রোববারের মধ্যে টিকা আসলেও লিখিত কোনো নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরুর সুযোগ নেই। মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা পেলেই এ কর্মসূচি শুরু করা যাবে।’
সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘চসিক প্রশাসকের নেতৃত্বে সিটি কর্পোরেশনের একটি কমিটি, জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং ইউএনও’র নেতৃত্বে উপজেলা পর্যায়ে কমিটি ইতিমধ্যে গঠিত হয়েছে। এছাড়া, কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা দেখার জন্য একটি বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি কমিটি নিজেদের আওতাধীন এলাকায় টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’
এদিকে, চসিক সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ১৫ টি টিকাদান কেন্দ্র চূড়ান্ত করেছে চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটি। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগরীর এ ১৫ কেন্দ্রে করোনার টিকাদান কার্যক্রম চলবে। টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে ৪২ টি টিম। টিকাদানকারী হিসেবে ২ জন মিড ওয়াইফ, স্টাফ নার্স বা সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং ৪ জন স্বেচ্ছাসেবকের সমন্বয়ে প্রতিটি টিমে ৬ জন করে সদস্য থাকবেন।
টিকাদানে নগরীতে প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত ১৫ কেন্দ্র হচ্ছে : চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম সেনানিবাস হাসপাতাল, চট্টগ্রাম পুলিশ হাসপাতাল, সিটি কর্পোরেশন জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম নৌ-বাহিনী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বিমান বাহিনী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতাল, চসিক বন্দরটিলা হাসপাতাল, চসিক মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল, চসিক ছাপা মোতালেব মাতৃসদন হাসপাতাল, ইউএসটিসি হাসপাতাল, সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মা ও শিশু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে করোনার টিকা দেয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ২টি করে টিম টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে। টিকাদানে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আগামীকাল থেকে জেলা পর্যায়ের এবং ১ ফেব্রুয়ারি থেকে উপজেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে।
সিভিল সার্জন আরও জানান, ভ্যাকসিন পেতে অগ্রাধিকার তালিকাভুক্তদের অনলাইনে বাধ্যতামূলকভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এজন্য ‘সুরক্ষা অ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। ভ্যাকসিন পেতে তালিকাভুক্তরা সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব এপ্লিকেশনে ww(w.surokkha.gov.bd) গিয়ে অথবা মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে পারবেন। অ্যাপটি ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিয়ে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের সময় কেন্দ্রও পছন্দ করা যাবে। রেজিস্ট্রেশনকারী ব্যক্তি ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ ও কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তার মোবাইল ফোনে পেয়ে যাবেন। নির্দিষ্ট তারিখে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।

BSSN

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে