ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ৮ বছরে প্রায় ৪০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার কৃষি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ সময়ে সরকার দেশের কৃষক ও কৃষিখাতের উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়ার ফলেই কৃষিতে ব্যাপক সাফল্য এসেছে।
কৃষকদের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার কৃষককে ভর্তুকি মূল্যে সার, বীজ, যন্ত্রপাতি দিয়েছে। সেচ মওসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। বর্গা চাষিদের জন্য কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্প সুদে বিনা জামানতে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
আগামীকাল বাংলাদেশ কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো ২ কোটি ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৩৯৭ জন কৃষকের মাঝে কৃষি উপকরণ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। ’
কৃষক লীগের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীসহ কৃষক সমাজকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থরক্ষার জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ কৃষক লীগ দেশের কৃষক সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষক লীগ কৃষকদের সংগঠিত করে তাদের দাবি আদায়সহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছে।
১৯৯৫ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের সারসহ কৃষি উপকরণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত ১৮ জন কৃষক ও কৃষক পরিবারের সদস্যদের তিনি স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতার পর পরই কৃষিখাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর সরকার কৃষকদের কল্যাণে ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিকদের খাজনা মওকুফ করে দিয়েছিলেন। তিনি উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার কৃষক ও কৃষিবান্ধব সরকার। আমরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম। পরবর্তীকালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার বাংলাদেশকে আবারো খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও বহুমুখীকরণ, বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করেছে। পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কার এবং জলবায়ু পরিবর্তনে সহনশীল ফসলের জাত, প্রযুক্তি ও কৌশল উদ্ভাবনের ফলে দেশের কৃষি নতুন মাত্রা পেয়েছে। দেশের কৃষি খাতে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। এখন বিদেশে চাল রপ্তানি করা হচ্ছে। দেশের কৃষি খাতে সফলতা অর্জনের ক্ষেত্রে কৃষক লীগের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। কৃষক লীগ ১৯৮৫ সাল থেকে দেশব্যাপী ১লা আষাঢ় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের নেতা-কর্মীগণ কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আরো বেশি আত্মনিয়োগ করবেন এবং ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে ভূমিকা রাখবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি কৃষক লীগের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

 

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে