ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে রোববার সন্ধ্যায় দেশের শীর্ষস্থানীয় বিপুল সংখ্যক ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের আমগনে মুখরিত হয়ে ওঠে।
এ সময় শেখ হাসিনা শীর্ষ স্থানীয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের জমকালো সংবর্ধনা দেন।
বাংলা নববর্ষ ১৪২৪ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশের শীর্ষ স্থানীয় ক্রীড়াবিদ, যারা বিগত ৬ মাসে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন তাদের সংবর্ধনা দেন।
প্রায় ৩৩৯ জন ক্রীড়াবিদ, কোচ এবং কর্মকর্তা এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই অনুষ্ঠানে যোগ দান করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০১৬ সালের সাউথ এশিয়ান গেমসের স্বর্ণজয়ী সাতারু মাহফুজা খাতুন শীলা, ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্তা ও শুটার শাকিল আহমদ- এই তিন জনের মাঝে অ্যাপার্টমেন্টের চাবি হস্তান্তর করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল, জাতীয় ক্রিকেট দল, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল, বাংলাদেশ অনূর্ধ ১৪ ফুটবল দল, বাংলাদেশ বধির ক্রিকেট দল, বাংলাদেশ স্পেশাল উইনটার অলিম্পিক টিম, বাংলাদেশ মহিলা ও পুরষ তীরন্দাজ দল, বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং দল, বাংলাদেশ মহিলা ও পুরুষ হ্যান্ডবল দল, বাংলাদেশ হকি দল, বাংলাদেশ শ্যুটিং দল, বাংলাদেশ ভারোত্তোলক দল, বাংলাদেশ ভলিবল দল এবং বাংলাদেশ জুনিয়র মহিলা ব্যাডমিন্টন দলের খেরোয়াড়দের মাঝে পদক ও নগদ অর্থের চেক প্রদান করেন।
বাংলাদেশের ওয়ান ডে এবং টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং বাংলাদেশ জাতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ১ কোটি করে টাকার পৃথক দুটি চেক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সাম্প্রতিক শ্রীলংকা সফরে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য এই অর্থ দেয়।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনকেও এক কোটি করে টাকা প্রদান করেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এ দুটি ফেডারেশনকে সম্প্রতি এই অংকের অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী গত আগস্টে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এএফসি আঞ্চলিক ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করায় বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব ১৬ মহিলা ফুটবল দলকে ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এই অর্থের অনুদান অনুর্ধ্ব ১৬ মহিলা ফুটবল দলকে প্রদান করে।
দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এবং কোচ গোলাম রব্বানী প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এই চেক গ্রহণ করেন।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সকল খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তাঁর সরকার দেশের খেলাধুলার মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার দেশের খেলাধুলার বিকাশে যা যা দরকার, সকল কিছুই করবে।’
শেখ হাসিনা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও গুরুত্বারোপ করে দেশের খেলাধুলার বিকাশে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘খেলাধুলার সম্প্রসারণ ও বিকাশ কেবল সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়, সরকারের পাশাপাশি এজন্য ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষকতারও একান্ত প্রয়োজন রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও আমাদের ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে, তারপরও তাদের আরো বহুদূর পাড়ি দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখছেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে দেশের জন্য ক্রীড়াঙ্গনে সম্মান বয়ে আনায় ক্রীড়াবিদদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন সিকদার, ক্রীড়া উপমন্ত্রী মো. আরিফ খান জয়, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে