নয়ন দাস, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রাম সদরের ধরলা ব্রিজের পূর্ব পাশের মাদরাসা মাঠের ইজতেমায় লাখো মুসল্লি।বিশ্ব শান্তি কামনায় শেষ হয়েছে কুড়িগ্রাম সদরের ধরলা ব্রিজের পূর্ব পাশে চলা তিন দিনের ইজতেমা। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজে ইজতেমা মাঠে লাখো মুসল্লির ঢল নামে। বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির ব্যানারে আয়োজিত ইজতেমায় জুমার নামাজে ইমামতি করেন চরমোনাই পীর মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। নামাজ শেষে বিশ্বমানবতার মুক্তি কামনায় দোয়া করা হয়।

সৈয়দ ফজলুল করীম (রহ.) জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত ইজতেমার আখেরি মোনাজাত আজ শনিবার সকালে হওয়ার কথা থাকলেও স্বাধীনতা দিবসের কারণে গতকাল রাতে এশার নামাজের পর করা হয়। ইজতেমা মাঠে সার্বিক নিরাপত্তায় সাদাপোশাকের পুলিশের পাশাপাশি আয়োজক কমিটির পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত ছিলেন।

জুমার নামাজ উপলক্ষে ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজের আগে মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন চরমোনাই পীর মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের ছোট ভাই মুফতি ইসাহাক আবুল খায়ের। মুসল্লিদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে মুফতি ইসাহাক বলেন, ‘আপনারদের ছেলেমেয়েদের কোরআন শিক্ষা দিন। বেশি বেশি দান-খয়রাত করুন।’ তিনি বাল্যবিবাহ বন্ধে আইনের সমালোচনা করে ১৮ বছর বয়সের কম ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে জড়ো হতে থাকেন। জুমার নামাজের পর বিকেল থেকে ইজতেমা মাঠে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। এতে ধরলা ব্রিজের পূর্বপাশ থেকে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কে যান চলাচলে ধীরগতির হয়।

গতকাল বিকেলে ইজতেমা মাঠে আসা মফিদুল ইসলাম জানান, তিনি মাঠে জুমার নামাজে অংশ নিতে পারেননি। কিন্তু আখেরি মোনাজাত কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চান না। এ জন্য আসরের নামাজের সময় থেকে তিনি মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। মফিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবছর ইজতেমা ও আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকি।’

ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের দল থেকে নির্বাচিত কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, ‘জুমার নামাজের খুতবা পাঠ এবং নামাজে ইমামতি করেন চরমোনাই পীর মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে জুমার নামাজ আদায় করা হয়।’

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘চেকপোস্টে পুলিশের নিয়মিত নিরাপত্তা তল্লাশির পাশাপাশি সাদাপোশাকের পুলিশ ইজতেমায় আগত মানুষের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ও তাদের নজরদারিতে রেখেছিল।’

গত বুধবার বাদ জোহর লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে শুরু হয় তিন দিনের এই ইজতেমা। উদ্বোধনী বয়ান করেন চরমোনাই পীর মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে