মাফি মহিউদ্দিন, কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ  নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় রোপা আমন ধান  ক্ষেতে মাজরা পোকা, কারেন্ট পোকা,  পাতা মোড়ানো , খোল পচা রোগ দেখা দিয়েছে বলে কৃষকেরা অভিযোগ করেছেন। বিভিন্ন কোম্পানীর কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন কাজ হচ্ছেনা। ফলে চলতি রোপা আমন ধান ক্ষেতের ফলন বিপর্যয়ের চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষক। 


তবে কৃষি বিভাগ বলছে আমন রোপা ধান ক্ষেতে  পোকার আক্রমনে ফলন বিপর্যয়ের কোন সম্ভাবনা নেই। কয়েকটি ব্লকে বা গ্রামে বিচ্ছিন্নভাবে  পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। 
গত সোমবার ও মঙ্গলবার উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের  মাঝাপাড়া, বড়ডুমরিয়া, কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ছিট রাজিব, পুষনা, মাগুড়া ইউনিয়নের মাগুড়া সিঙ্গেরগাড়ী, পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুরসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে কৃষকের আমন ক্ষেত হলদে রং ধারন করেছে। আবার কোথাও কোথাও পাতা শুকিয়ে ধান গাছ মরে যাচ্ছে।  


বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ডুরিয়া গ্রামের কৃষক আমির আলী বলেন, আমি এবার ৬বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। আমার ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমনে ধান ক্ষেতে পঁচন দেখা দিয়েছে। পচনের ফলে ধানের শিষ শুকিয়ে যাচ্ছে। কোন ওষুধে কাজ হচ্ছেনা। 
এবার পোকার আক্রমনের কারণে বিঘাপ্রতি ৫ থেকে ছয়মণ ধান ফলন কম হবে। একই গ্রামের চাষী মফিজার রহমান ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকার উপ সহকারী কৃষি কর্মকতার্র পরামর্শে ধান ক্ষেতে এমিস্টার টপ, ভিরতাকো এবং সর্বশেষ তুফান পর পর দুবার স্প্রে করেও কোন কাজ হচ্ছেনা। 
কিশোরগঞ্জ বাজারে কিটনাশক কিনতে আসা সদর ইউনিয়নের দক্ষিন রাজিব গ্রামের কৃষক ছকমাল হোসেন বলেন, আমি এবার পনে দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। আমার ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমনে ধান ক্ষেতের পাতা সাদা হয়েছে এবং ধান গাছ পঁচে যাচ্ছে। ধান ক্ষেতে কিটনাশক প্রয়োগের জন্য কৃষি কর্মকতার্র কাছে যাননি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কৃষি কর্মকতার্র কাছে গেলে কমপক্ষে ৭ হাজার টাকার কিটনাশক লিখে দেবে।  তাছাড়া আমার এলাকার বিএসকে কোনদিন চোখেও দেখিনি। 
 এছাড়াও মাগুড়া ইউনিয়নের উত্তর সিঙ্গেরগাড়ী জুম্মাপাড়া গ্রামের কৃষক, আনারুল ইসলাম, আসাদুল্লাহ, মিলন মিয়া। গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক তোফাজ্জল হোসেন, ধওলা মিয়াসহ হাজার হাজার কৃষকের রোপা আম ক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ফলে এবার ফলন বিপর্যয়ের চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষক। 


উপজেলা কৃষি কর্মকতার্ হাবিবুর রহমান বলেন, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। এবার আমন ক্ষেতের অবস্থা মোটামুটি ভাল। বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও পোকার আক্রমনসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। আমাদের মাঠ পযার্য়ের কৃষি কর্মকতার্গণ কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। তবে এবার আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় এবং অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এমনটি হচ্ছে। 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে