কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী: বাল্য বিবাহ পড়ানো বন্ধে কাজীদের প্রতি সরকারিভাবে নির্দেশনা থাকলেও কোনমতেই থামছে না বাল্যবিবাহ আর এই বাল্যবিবাহ পড়ানোর মূলহোতা মাগুড়া ইউনিয়নের নেকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার কাজী নূরুল মুরতুজা।

জানাগেছে গত তিন মাসের ব্যবধানে নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫০টির মতো বাল্য বিবাহ পড়িয়েছেন তিনি।

সরকারসহ বিভিন্ন এনজিও যেখানে বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন, সেখানে অবাদে চলছে বাল্যবিবাহ।

সরকারের পাশাপাশি কিছু সামাজিক সংগঠন ও এলাকার কিছু সচেতন ব্যক্তি বাল্যবিবাহ বন্ধের ব্যাপারে ভুমিকা পালন করলেও রাতের আধারে গোপনে কিংবা কোন আত্মীয়র বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিয়ের কাজ সারানো হচ্ছে।

বাল্যবিবাহ বন্ধের ব্যাপারে মসজিদের ঈমাম, ধর্মীয় নেতা এমনকি সুশিল সমাজকে নিয়ে উপজেলার কিছু এনজিও ওয়ার্কসপ করলেও কোন কাজে আসছে না কারন যে, ঈমামকে দিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়ার কথা তারাই কাজী বিয়ের পর মৌলভী বিয়েটা তাদের দ্বারাই পড়ানো হচ্ছে, তার মনে রক্ষকেই হচ্ছে ভক্ষক। কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এক সেমিনারে বাল্যবিবাহ ধরিয়ে দিতে পারলে এক হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন এমনকি গ্রাম পুলিশদেরকেও বাল্যবিবাহ বন্ধের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেখানে মাগুড়া ইউনিয়নের নেকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার কাজী নুরুর মুরতুজা বাল্যবিবাহ পড়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

তিন মাসের ব্যবধানে যেসব এলাকায় বাল্যবিবাহ পড়িয়েছেন কিছু নমুনা দেয়া হলো, গত শুক্রবার রাত অনুমানিক ১২টায় মাগুড়া দর্জিপাড়া গ্রামের সেলিম মিয়ার কন্যা অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সীমা আক্তার (১৪) এর আগে একই গ্রামের ফেরদৌস মিয়ার কন্যা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সোনালী আক্তার (১৩),মাগুড়া মিয়া পাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের কন্যা দশম শ্রেনীর ছাত্রী সাথী আক্তার (১৬) একই গ্রামের সাইদুল ইসলামের কন্যা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সিতু আক্তার শিমু (১৪), মাগুড়া শাহপাড়া গ্রামের আনোয়ারুলের কন্যা দশম শ্রেণির ছাত্রী মিম আক্তার (১৬), লাল মিয়ার কন্যা আলো মনি (১৪), জাল মিয়ার কন্যা সূর্য মনি (১৩) ও চাঁদনী আক্তার (১৪) সবগুলো বাল্যবিবাহ পড়িয়েছেন কাজী নূরুল মুরতুজা।

এসব বিয়ে গুলো মানুষ দেখানো তার ব্যাক্তিগত নেকাহ রেজিষ্টার বইয়ের মধ্যে তুলে নেন। পরে বিয়ের বয়স হলে মুল নেকাহনামা বইয়ের রেজিষ্ট্রারে তুলেন। সচেতন ব্যক্তিরা বলেন বাল্যবিবাহের কারনে অল্প বয়সে গর্ভধারনের ফলে মৃত্যুর ঝুকি বাড়ছে,খাদ্য সংকটের ফলে নানা অপুটিতে ভোগে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, স্বাস্থ্যহীনতায় ভুগছে,বিবাহ বিচ্ছেদ ও নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এবিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এবিষয়ে নেকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার কাজী নূরুল মুরতুজার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান এসব মিথ্যা এবং বানোয়াট।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে