কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী থেকেঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ধাইজান নদী খননের মধ্য দিয়ে ধাইজান নদী আবার ও ফিরে পেতে যাচ্ছে তার হারানো যৌবন। সেই সাথে এলাকাবাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হতে চলেছে।
ধাইজান নদী একটি ঐতিহ্যবাহী নদী হওয়ার পর ও যুগযুগ থেকে এ নদী খনন না করায় মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌশুমে পানি থাকলে ও শুষ্ক মৌসুমের আগেই নদীর পানি শুকিয়ে যায়। ফলে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

এক সময় ধাইজান নদী ছিল খরস্রোতা নদীতে উত্তাল ঢেউ। সারা বছর নদীতে থাকতো পানি। আর এই পানি সেচ কাজে ব্যবহার করে এ উপজেলায় চাষ করা হতো বোরো ধানসহ সব রকমের ফসল। এ ছাড়াও সারা বছর মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো এ অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মৎস্যজীবি।

কালের আবর্তে নদীটি হারিয়ে ফেলে তার নাব্যতা আর য়ৌবন। সারা বছর তো দূরের কথা বছরে ৫/৬ মাস ও নদীতে টিকমত পানি পাওয়া যায না। ফলে স্বল্প খরচে নদীর পানি দিয়ে কৃষকরা আর চাষাবাদ করতে পারে না। পারেনা মৎস্যজীবিরা মাছ শিকার করতে। একদিকে আর্থিক লোকসানের শিকার হয় এলাকার হাজার হাজার কৃষক। অপর দিকে বছরের প্রায় ৬/৭ মাস মানবেতর জীবন যাপন করতে হয় মৎস্য জীবিদের। ফলে থেমে যায় এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চাকা।

এ উন্নয়ন তরান্বিত করতে এবং নদীকে আবার ও আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন নদী খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আহসান আদেলুর রহমান আদেলের প্রচেষ্টায় প্রথমধাপে ধাইজান নদীর ২৮.৮ কিলোমিটারের মধ্যে ৯ কিলোমিটার জুড়ে ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নদী খনন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ’এর স্বত্তাধিকারী আরিফ হোসেন ও এসডিই শাহ মোহাম্মদ মোফাখারুলের তত্বাবধানে চলছে ঐতিহ্যবাহী ধাইযান নদী খনন। এ নদীর খনন শেষ হলে সারা বছর নদীতে থাকবে পানি। এ পানি দিয়ে কৃষকরা স্বল্প খরচে তাদের কৃষি পণ্য উৎপাদন করতে পারবেন। এ চাড়া ও মৎস্য জীবিদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন নদী খননের ফলে শুধু কৃষি ক্ষেত্রেই নয় মৎস্য ক্ষেত্রে ও অতুলনীয় ভূমিকা রাখবে। জেলে সম্প্রদায়ের অনেক উপকার হবে। নদী খননের ফলে নদীর গভীরতা বাড়বে। কৃষি জমি ও বন্যার পানিতে লোকালয় ডুবে যাওযার শংকা কমে আসবে। পাশাপাশি মাছ চাষ ও সেচ সুবিধা বাড়বে।

উপজেলার পুটিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন ও বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলার রহমান বলেন, আগে আমরা নদীর পানি দিয়ে বোরো ধানসহ সব রকমের কৃষিপণ্য চাষ করতাম। এতে খরচ খবেই কম হতো। কিন্তু বেশ কয়েক বছর থেকে বোরো চাষ মৌসুমের অগেই নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কয়েকগুণ বেশি খরচে মাঠে শ্যালো মেশিন বসিয়ে বোরোসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলের চাষ করতে হচ্ছে। এতে আমরা অনেক লোকসানের শিকার হচ্ছি। নদী খনন আমাদের জন্য একটি আশীর্বাদ বলে আমরা মনে করছি।

এখানে উল্লেখ্য যে, এসডিই শাহ মোহাম্মদ মোফাখারুলের কাছে নদী খননের সাইন বোর্ড লাগানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, সাইন বোর্ড লাগানো হয়েছে। সাইন বোর্ডে বিস্তারিত লেখা রয়েছে। তবে নদী খননের প্রকল্প এরিয়া ঘুরে কোথাও সাইন বোর্ড চোঁখে পড়েনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে