মোঃ আব্দুল মান্নান, উপজেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী : বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজ নিজ রীতি নীতিতেই পালিত হয়ে থাকে নববর্ষ। খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডারে এখন জানুয়ারী মাসের ১ তারিখে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপিত হয়। দেশ ভেদে নিজস্ব ধর্মীয় বিশ^াস ও ঐতিহ্যের ভিত্তিতে খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডার অনুস্মরণ করেও বিশে^ বহু জাতি ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করে থাকে। দেশ ও স্থান ভেদে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে ব্যতিক্রমী রীতি নীতি আয়োজন লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন শুরু হয়েছিল যিশু খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় দুই হাজার বছর আগে। শুরুর ১ম দিকে ১ মার্চকে বছরের প্রথম দিন হিসাবে ধরে নববর্ষ পালন করা হতো। মার্চ মাসের ১ম তারিখ ছিল ইংরেজি নববর্ষেও প্রথম দিন। ঐ সময় ইংরেজি বছর গননা করা হতো ১০ মাসে। মার্চ মাস থেকে শুরু হতো নতুন বছর। কিন্তু দিন পঞ্জিকায় জানুয়ারি মাসের অন্তর্ভূক্তি হয় যিশু খ্রীষ্টের জন্মের একশত তেপ্পান্ন বছর আগে এবং জানুয়ারী মাসে প্রথম নববর্ষ উদযাপিত হয় রোম শহরে। রোমের ২য় রাজা নুমা পন্টিনাস দিন পঞ্জিকায় নতুন দুটি মাস হিসাবে জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসকে নববর্ষ অন্তর্ভূক্ত করেন। তবে মার্চ মাসের প্রথম তারিখেই ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন ধরা হত ঐ সময়। খ্রীষ্টের জন্মের ৪৬ বছর আগে জুলিয়াস সিজার প্রাচীণ রোমান দিনপঞ্জিকায় একটি বড় ধরনের পরিবর্তন এনে নতুন দিনপঞ্জিকা চালু করেছিলেন। ঐ দিনপঞ্জিকায় ১ জানুয়ারীকে বছরের প্রথম দিন হিসাবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে বছরের ১ম দিন হিসাবে ১ জানুয়ারীতেই ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন শুরু করা হয়। এরপর ৫৬৭ খ্রীষ্টাব্দে এসে ইউরোপের দ্বিতীয় অঞ্চলে ১ জানুয়ারীকে ইংরেজি নববর্ষ থেকে বাদ দেয়া হয় এবং ইউরোপের কোথাও কোথাও ২৫ ডিসেম্বর, কোথাও ১ মার্চ আবার কোথাও ২৫ মার্চে নববর্ষ উদযাপন করা হতো। তবে ১৫৮২ খ্রীষ্টাব্দে গ্রেগরিয়ান দিনপঞ্জিকা অনুযায়ী ১ জানুয়ারীকে পুণরায় নতুন বছরের প্রথম দিন হিসেবে উদযাপন শুরু করা হয়। এরপর থেকেই ১ জানুয়ারী ইংরেজি নববর্ষ হিসেবে আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৭৫২ সাল থেকে আমেরিকা ও ব্রিটেনে ১ জানুয়ারীতেই নববর্ষ পালন শুরু হয় তবে এটি কোন ইংরেজি নববর্ষ ছিল না। কারণ ব্রিটিশরা পার্লামেন্টে আইন পাশ করে সে দেশে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডাকেই নিজেস্ব ক্যালেন্ডার হিসেবে গ্রহণ করে,তাই এ ক্যালেনন্ডারকে কোন মতেই ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলা যাবে না। তবে যে নামেই এ নববর্ষকে গ্রহন করা হোক না কেন এ নববর্ষ পালনে বর্তমানে আনন্দ উল্লাসের কোন ঘাটতি চোখে পড়ে না। তাই আমরা বাঙালী জাতি এ ইংরেজি নববর্ষকেই বরাবরই স্বাগত জানাই। নববর্ষ আমাদের ভাবনা চিন্তায় ও নতুন সাধনায় সামনে এগিয়ে চলার পথনির্দেশ দেয়। সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতাসহ সমস্ত মানবতাবিরোধি চিন্তা-চেতনা পরিহার এবং সকল প্রকার অন্যায় ও জুলুমের বিরূদ্ধে রূখে দাঁড়ানোই হোক ২০২০ সালে আমাদের একমাত্র অঙ্গিকার । সর্বশেষে বলতে হয় খ্রিষ্টীয় নববর্ষ এখন আপন মহিমায় জাতি,ধর্ম, রাষ্ট্রিক ধ্যান ধারণা নির্বিশেষে আন্তর্জাতিক নববর্ষে প্ররিণত হয়েছে। খ্রিষ্টিয় নববর্ষ তাই এখন বিশ্বে অনেক জতির নববর্ষ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে