ডেস্ক রিপোর্ট:খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি কী আইনের ওপর নির্ভর করছে না আন্দোলনের ওপর এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আইনি বিষয়। কারণ খালেদা জিয়া দুর্নীতির জন্য শাস্তি পেয়েছেন। তাকে মুক্ত করতে হলে আইনের মাধ্যমে করতে হবে। আইনি পথ ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনো সুযোগ নেই বলে  তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কোনো রাজনৈতিক বন্দি নয়। রাজনৈতিক বন্দি হলে আন্দোলনের প্রশ্ন আসে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান। হাছান মাহমুদ বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয়ে খালেদা জিয়া জানতেন ও তারেক রহমানের নির্দেশে হয়েছে বলে ইউকিলিসের তথ্যে উঠে এসেছে। এখন বিএনপি এ বিষয়ে কী জবাব দেবে বলে জানতে চেয়েছেন তিনি।

ইউকিলিসের নথিতে গ্রেনেড হামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম এসেছে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে তথ্যটি আমরা এতদিন বলে আসছিলাম। সে বিষয়টিই ইউকিলিসের তথ্যের মধ্যে উঠে এসেছে। এ বিষয়টি আদালতে সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে তারেক রহমান ২১ আগস্ট হামলার মাস্টার মাইন্ড এবং খালেদা জিয়ার গেতসারে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। মূলত জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্য ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য। সেটা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা যখনই এ বিষয়টি বলেছি, তখনই বিএনপি বিরুদ্ধ বক্তব্য রেখেছে। আমার প্রশ্ন জাগে, ইউকিলিস ব্যাপারে বিএনপির কী বক্তব্য তারা কি বলবে?

বিএনপির কাছে প্রশ্ন রেখে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা কোন পথে খালেদা জিয়ার মুক্তি চান। খালেদা জিয়ার মুক্তিতো আইনের পথে হাঁটা ছাড়া অন্য কোনো পথে সম্ভব নয়। বিএনপি বার বার হুঙ্কার দেয় আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে। বিএনপির আন্দোলনের নমুনা আমরা গত সাড়ে ১০ বছর ধরে দেখছি। সুতরাং খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি পরিপূর্ণ আইনের বিষয়। অন্য কোনোভাবে মুক্তি সম্ভব নয়।

গত কয়েক তিন ধরে বিএনপি নেতাদের দৌড়ঝাপ নিয়ে সরকার নমনীয় কিনা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতারা আগেও দৌড়ঝাপ করেছেন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য। গত কয়েক দিনে বিএনপির সংসদ সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন। তারপর তারা বলেছেন, খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাবেন। কিন্তু কোথায় পাঠাবেন কী করবেন সেটাতো পরের বিষয়। প্রথমেতো তার মুক্তির বিষয়টি সুরাহা করতে হবে। এটা একান্ত আইনি বিষয়।

রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে সহযোগিতা করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুক্তির বিষয়টি আইনি বিষয়। জামিনের মাধ্যমেও হতে পারে আবার খালাস পেলে মুক্ত হতে পারে। আর প্যারোলে মুক্তির প্রসঙ্গ থাকলে সেটিও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে। প্যারোল নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বা তারাও আবেদন করেনি।

সরকার খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের ভয়ে আটকে রেখেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাকে রাজনৈতিক কারণে বন্দি করা হয়নি। রাজনৈতিক কারণে কাউকে বন্দি করা হলে তাকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন হয়। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে তা নয়। তার বিষয়টি হচ্ছে, তিনি এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সে কারণে আদালতে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তার মুক্তির বিষযটি আদালতের মাধ্যমেই হতে হবে অন্য কোনো মাধ্যমে নয়।

তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি ৩৫টির বেশি টিভি চ্যানেল। ৪৫টার লাইসেন্স দেওয়া আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশে পাবলিক টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়। এটি দেশের জন্য আনন্দের-সুখের।

বুধবার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশের সব প্রাইভেট চ্যানেল আমাদের গর্বের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারে গেছে। এতদিন বাংলাদেশের টাকাগুলো বিদেশি স্যাটেলাইট চ্যানেল যারা পরিচালনা করে তাদের দিয়ে দিতে হতো। ফলে ফরেন কারেন্সি বাংলাদেশ থেকে চলে যেতো। পাশাপাশি সেই পেমেন্ট করার জন্য কিছুটা ঝামেলাও ছিল। সেটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হতো। সেজন্য একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। কিন্তু এখন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে বাংলাদেশি মুদ্রাতেই পেমেন্ট দেওয়া যাবে। পাশাপাশি সাশ্রয়ী মূল্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সেবাটি দেবে। বিটিভি কয়েক মাস আগ থেকে শুধু মাত্র বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সম্প্রচার হচ্ছে। এতে কোনো ত্রুটি আমরা পাইনি। ত্রুটিমুক্তভাবেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার করছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পরিপূর্ণ সেবা দেওয়ার জন্য যা যা করণীয় করেছে।

টিভির সিরিয়াল মানা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা নির্দেশনা দেওয়ার পর বাংলাদেশের বেশিরভাগ টিভি চ্যানেল মেনে চলছে। যারা মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দেশ ডিজিটাল হয়েছে। তাই সস্প্রচার মাধ্যমটাকে ডিজিটাল করতে হবে। আমরা চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রামকে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল করতে। এরপর পর্যায়ক্রমে সারা দেশে ডিজিটাল সম্প্রচার হোক এটাই আমরা চাই।

P/B/A/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে