কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী: রংপুর মহানগরীতে ভাড়া ফ্লাট বাসায় অসামাজিক কর্মকার্যকলাপের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের সাবেক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রæয়ারি) বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, সোমবার (১৯ ফেব্রæয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি ও (বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেয়ায় বহিস্কৃত) সভাপতি আব্দুল বারেক, যশোরের বিপাশা খাতুন এবং দিনাজপুরের সাদিয়া আকতার।

আরপিএমপির কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোতাসিম বিল্লাহ জানান, রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন মহল্লায় ফ্লাট বাসা বাড়ি ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসা করে আসছিল। বিষয়টি আমরা অনুসন্ধানে রেখেছিলাম। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ ধরনের একটি খবর পেয়ে নগরীর সরদারপাড়া মহল্লায় অভিযান চালায়। সেখানে মোফাখারুল ইসলামের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বীনা রানী নামের এক নারী অসামাজিক ব্যবসা করে আসছিলেন। সেখানে অভিযান চালিয়ে ভাড়াটিয়া বীনা রানীর ফ্লাট থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করি। তাদের নামে মামলা রুজু করে আদালাতের মাধ্যমে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রæয়ারি বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল জানান, বীনা রানী নাকি আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর পরিচয় দিয়েছেন। আসলে তিনি আওয়ামীলীগের কেউ নন। আব্দুল বারেক সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন আব্দুল বারেককে আমি চিনি তাদের যে কর্মকান্ড তাদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি হওয়া দরকার।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি রশিদুল ইসলাম বাবু নয়াদিগন্তকে জানান, আব্দুল বারেক চাঁদখানা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। অতএব তার কোনো কর্মের দায় দেনা স্বেচ্ছাসেবকলীগ বহন করবে না।

তদন্ত সূত্রগুলো জানায়, বীনা রানী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের রণচন্ডি ইউনিয়ন এবং আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি রংপুরে বন্ধন জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক। তার বিরুদ্ধে ওই ফ্লাট ভাড়া নিয়ে নারী ও পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত অসামাজিক মেলামেলার ব্যবসা করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে ঘটনার সময় তাকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের আটকের সময় তিনি সটকে পড়েন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সূত্র জানায়, রংপুর মহানগরীর অনেক ভাড়া ও নিজস্ব বাসাবাড়িতে এ ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের তথ্য তাদের কাছে আছে। বিভিন্ন পেশার আড়ালে তারা এ ধরনের কর্মকাকান্ড করে আসছে। অনেক ক্ষেত্রেই এসব বাসার খদ্দের সমাজের একশ্রেনির প্রভাবশালী ও পেশাজীবি লোকজন। এসব ব্যক্তির প্রভাব এবং ক্ষমতাকেও ব্যবহার করছেন ব্যবসায়ীরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে