বিডি নীয়ালা নিউজ(১৬ই  আগস্ট ২০১৬ইং)-ডেস্ক রিপোর্টঃ  চরম অনিশ্চয়তায় দেশের সবচেয়ে পুরাতন মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল থেকে গত এক মাসে ২৭ জন কর্মী চাকরি ছেড়েছেন। সিটিসেলে মোট কর্মরত শ্রমিকদের সংখ্যা ছিল ৪৪৩ জন। এর মধ্যে নারী কর্মী ৭২ জন। সম্প্রতি ২৭ জন কর্মী বিদায় নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটিতে এখন মোট কর্মীর সংখ্যা ৪১৬ জন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদায় নেওয়া কোন কর্মীকে শেষ চার মাসের বেতন দেওয়া হয়নি। আগামীতে তারা কবে বেতন পাবে বা স্বেচ্ছায় অবসর স্কিমের সুযোগ তৈরি হবে কিনা সে বিষয়ে কোন কিছুই তাদের বলা হয়নি। তবে সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ‘সুসময়ের’ জন্য সবাইকে অপেক্ষা করতে বলেছেন।

তবে সিটিসেলে এই ‘সুসময়’ কবে আসবে সে সম্পর্কে খোদ কর্তৃপক্ষেরও কোন স্পষ্ট ধারণা নেই। গত ৩১ জুলাই বিটিআরসি থেকে সিটিসেলের সকল গ্রাহকদের অন্য অপারেটরে চলে যাওয়ার জন্য গনবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে টনক নড়ে সিটিসেলের। কিন্তু এরপর করণীয় কি সে বিষয়ে কখনই কর্মীদের ধারণা দেওয়া হয়নি। ফলে তারা সবাই অনিশ্চয়তায় জীবন যাপন করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটিসেল ইউনিয়নের এক নেতা প্রিয়.কমকে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে বারবার সিটিসেল কর্তৃপক্ষের সাথে বসার চেষ্টা করেছি কিন্তু আমাদের কোনভাবেই সময় দেওয়া হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা বাধ্য হয়ে নিজেরাই সময় না নিয়ে ৭ জুলাই সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহবুব চৌধুরীর সাথে দেখা করি।’

তিনি জানান, ৭ জুলাই মেহবুব চৌধুরীর সাথে সিটিসেলের সকল স্তরের কর্মীদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে তিনি বলেন, “আমরা তো কোম্পানি বন্ধ করছি না; তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।” বেতনের ব্যাপারে বলেন, “কবে বেতন দিতে পারবো সে ব্যাপারে কোন টাইম দিচ্ছি না তবে তাড়াতাড়ি দেওয়া হবে।” বিনিয়োগের ব্যাপারে বলেন, “বিনিয়োগের ব্যাপারে টাকা না আসা পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না।”

এদিকে সিটিসেলে জানুয়ারি থেকে বেতন অনিয়মিত দেওয়ার পাশাপাশি সম্প্রতি ঢাকা ও চট্টগ্রামে কর্মীদের বহনকারী গাড়ি ও সিলেট-খুলনার সিটিসেলের বিভাগীয় অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের কোন দিকনির্দেশনা না দেওয়ার কারণে প্রায় সবাই হতাশার মধ্যে রয়েছেন। ২৭ জন চাকরি ছাড়লেও আরও অনেকেই চাকরি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

সিটিসেলের কর্মীদের চাকরি থেকে বিদায় নেওয়া প্রসঙ্গে প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের (পিবিটিএলইইউ) সভাপতি আশরাফুল করিম প্রিয়.কমকে বলেছেন, ‘সিটিসেলের কর্মীরা অনিশ্চিত জীবন-যাপন করছে। অথচ তাদের দেখার বা তাদের বিষয়ে কথা বলার কেউ নেই। আমাদের কর্মীদের ব্যাপারে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর জন্য ইতিমধ্যেই আমরা বিটিআরসি ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কাছে চিঠি লিখেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে কয়েকজন কর্মী অনিশ্চিত চাকরি থেকে বিদায় নিয়েছেন তাদের কাউই শেষ চার মাসের বেতন পাননি। চাকরি থেকে চলে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? সিটিসেল কর্তৃপক্ষও আমাদের কোন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন না। এখন আমাদের করণীয় কি সেটা আমরা কেউ বুঝতে পারছি না।’

প্রসঙ্গত, সিটিসেলের গ্রাহকদের অন্য অপারেটরে চলে যাওয়ার বিষয়ে বিটিআরসি যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল সে বিষয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেছেন, “আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কীভাবে অপারেটর বদল করতে পারি? আমার মনে হয়, এতে বিটিআরসির সিদ্ধান্তগত একটু অপরিপক্কতা প্রকাশ পেয়েছে।” তবে, এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগামীকাল বুধবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিটিআরসি ও সিটিসেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারানা হালিমের বৈঠক করার কথা রয়েছে।

 

 

 

priyo

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে