knee-pain

বিডি নীয়ালা নিউজ(১২ই মার্চ১৬)-স্বাস্থ ও চিকিৎসা প্রতিবেদনঃ ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ হচ্ছে কোন প্রকার আঘাত বা সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। যার ফলে শরীরে লালভাব দেখা দেয়, ফুলে যায় ও তাপ উৎপন্ন হয়। যদি এই প্রদাহ দীর্ঘ সময় যাবত স্থায়ী হয় তাহলে তা ইনফেকশন, অটোইমিউন রিঅ্যাকশন বা অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। কিছু খাদ্য চিহ্নিত করা হয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান হিসেবে যারা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ও ব্যথা কমাতে পারে। প্রদাহরোধী ও ব্যথানাশক উপাদান সমৃদ্ধ খাবারগুলো নিয়ে গবেষণার ফলাফল মিশ্র তবে আশাপ্রদ। প্রতিনিয়ত শরীরে ব্যথা বেদনা থাকলে তা আপনার উৎপাদনশীলতা ও জীবন মানের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। ব্যথানাশক ঔষধের উপর নির্ভরশীলতা প্রচুর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু প্রাকৃতিক উপাদান সাহায্য করতে পারে। আসুন তাহলে জেনে নিই ব্যথানাশক প্রাকৃতিক উপাদান গুলো সম্পর্কে।

১। হলুদ

আয়ুর্বেদ ও চীন দেশের ঔষধ প্রস্তুতিতে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি এজেন্ট হিসেবে কারকিউমিন ব্যাপক ভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে যে হলুদের নির্যাস আরথ্রাইটিস প্রতিরোধ করতে পারে এবং এসেনশিয়াল ওয়েলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে জয়েন্টের প্রদাহ কমতে সাহায্য করে। মনে রাখবেন হলুদ গ্রহণের দৈনিক আদর্শমাত্রা ৪০০-৬০০মিলিগ্রাম। এছাড়াও প্রাচীনকাল থেকেই হলুদ ক্ষত, সংক্রমণ, ঠান্ডা ও লিভারের রোগ নিরাময়ে ব্যবহার হয়ে আসছে।

২। আঙ্গুর

আঙ্গুরে উপস্থিত রেসভেরাট্রল আরথ্রাইটিসের জয়েন্টের ব্যথা কমতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। রেসভেরাট্রল ডায়েট সাপ্লিমেন্ট ক্যাপসুল হিসেবে বাণিজ্যিক ভাবে পাওয়া যায় এবং দৈনিক ৫০-৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত গ্রহণ করা যায়। আপনার যদি রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা থাকে তাহলে বা অ্যান্টি প্লাটেলেট ঔষধ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সাপ্লিমেন্টারী ক্যাপস্যুল গ্রহণ করবেন না।

৩। আদা

এশিয়ান রান্নার প্রাণবন্ত মশলা হচ্ছে আদা। আদা পেট নামা, মাথা ব্যথা ও সংক্রামক ব্যাধী সারানোর ঐতিহ্যগত ঔষধ। আদার অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদানের প্রশংসা বহু প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আদার উপকারিতা  প্রমাণিত হয়েছে।

৪। গ্রিনটি

গ্রিনটি এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে যে, গ্রিনটি এর অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান আরথ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। দৈনিক ৩-৪কাপ গ্রিনটি পান করার পরামর্শ দেয়া হয়।

৫। রসুন

বাতের উপসর্গ কমাতে পারে রসুনের প্রদাহনাশক উপাদান। অনেক ধরণের খাবারের সাথেই রসুন ব্যবহার করা হয়। সুগন্ধ ও স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য রান্নায় তাজা রসুন ব্যবহার করুন।

৬। গোলমরিচ

প্রাচীনকাল থেকেই গোলমরিচ ও লালমরিচ স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য প্রসিদ্ধ। সকল মরিচেই ক্যাপসেইসিনোয়েড নামক অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান থাকে যা হজম সহায়ক হিসেবে কাজ করে। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, গোলমরিচ বাতের ব্যথা ও মাথা ব্যথায় আরাম প্রদান করে।

৭। লবঙ্গ

মুখ ও গলার প্রদাহ, পেট খারাপ ও বমি বমি ভাব কমতে সাহায্য করে লবঙ্গ। লবঙ্গের সুগন্ধ ও পুষ্টি উপকারিতার জন্য চায়ের সাথে আস্ত লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়। আবার বেক করা বিভিন্ন খাবারে লবঙ্গের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়।

এছাড়াও দারুচিনি, ক্যাপসিকাম, মাছের ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড, বাদাম এমনকি চকলেটেও ব্যথানাশক অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান আছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে