majar

বিডি নীয়ালা নিউজ(১৯জানুয়ারি১৬)- ঢাকা প্রতিনিধিঃ  বগুড়া নয়, মিরপুরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে   বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার। সংসদ ভবনের উত্তর পাশের চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে জিয়ার মাজার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সেক্টর কমান্ডারদের জন্য সংরক্ষিত এলাকায় এ মাজার সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সংসদ এলাকা থেকে খুব শিগগিরই সরে যাবে নকশাবহির্ভূত সব স্থাপনাও। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। সরিয়ে নেওয়া হবে সংসদ ভবনের দক্ষিণ চত্বরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় অবস্থিত জাতীয় কবরস্থানের সাতটি কবরও। তবে সেখান থেকে সব কবর মিরপুরে যাবে না। বিতর্কিত ব্যক্তিদের কবর অন্যত্র সরানো হবে। এদের কবর নিজ নিজ পারিবারিক কবরস্থানে বা কোনো সরকারি কবরস্থানে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়ার মাজার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন গতকাল বলেন, ‘কবরস্থানের জায়গায় কবর হবে। মুক্তিযোদ্ধারা-সেক্টর কমান্ডাররা একসঙ্গেই থাকুন। আমিও একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমাকেও সেখানে দিলে অসুবিধা কোথায়? কবর কবরস্থানেই থাকা উচিত। স্থপতি লুই আই কানের নকশায় এখানে কোনো কবরস্থান নেই। সচিবালয়ের জায়গা আছে। আইয়ুব খান সংসদ ভবনকে ঘিরে শেরেবাংলানগরজুড়ে সেকেন্ড ক্যাপিটাল গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সেভাবেই লুই আই কানের ডিটেইল নকশা প্রণীত হয়েছে। আমরা সে নকশাটাই কেবল প্রতিস্থাপন করতে চাইছি।’

তবে তিনি এও বলেন, ‘কোনো কবর সরানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। সরবে নকশাবহির্ভূত সব স্থাপনা। আমরা অবশ্যই লুই কানের নকশা পুনঃস্থাপন করব। অবশ্যই আইয়ুব খানের  সেকেন্ড ক্যাপিটালের নকশা বাস্তবায়ন করব।’ প্রতিস্থাপনের ঘটনাটি স্বাধীনতা দিবসের আগেই ঘটছে কিনা— এমন প্রশ্নে তিনি শুধু বলেন, ‘সহসাই সরে যাবে। কবরস্থানের জায়গায় কবর হবে। অন্য কবরগুলোও সময়মতো যথাস্থানে প্রতিস্থাপিত হবে।’

১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে জিয়ার মাজারকে কেন্দ্র করে চন্দ্রিমা উদ্যানের নাম পরিবর্তন করে জিয়া উদ্যান করে এবং এখানে সুদৃশ্য একটি সমাধিসৌধ নির্মাণ করে। এ ছাড়া মাজারে যাওয়ার জন্য স্থাপন করে একটি আকর্ষণীয় বেইলি ব্রিজ। তবে ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ জিয়া উদ্যানকে ফিরিয়ে দেয় তার আগের পরিচয় ‘চন্দ্রিমা উদ্যান’-এ। ক্রিসেন্ট লেকের ওপর থেকে বেইলি ব্রিজটিও সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে আবার বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেখানে কনক্রিটের ঝুলন্ত সেতু নির্মাণসহ একটি কমপ্লেক্স গড়ে তোলে। সেখানে জিয়ার মাজারের চারদিকে থাকা চারটি প্রবেশপথের শুরু বা শেষ প্রান্তে রয়েছে ঝুলন্ত সেতু, সম্মেলন কেন্দ্র ও মসজিদসহ চারটি স্থাপনা। এ ছাড়া বিএনপি সরকার চন্দ্রিমা উদ্যানের পাশে ১০ একর জমিতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র গড়ে তোলে; যা পরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র নামকরণ করা হয়।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী এসব স্থাপনা জাতীয় সংসদের নকশাবহির্ভূত। এ ছাড়া শেরেবাংলানগরে আছে লুই আই কানের নকশাবহির্ভূত আরও সাতটি স্থাপনা। এর মধ্যে জিয়ার মাজার ছাড়াও রয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের জাতীয় কবরস্থান। যেখানে রয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান ও আতাউর রহমান খান, সাবেক মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়া, মুসলিম লীগ নেতা খান এ সবুর, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ এবং পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার তমিজউদ্দীন খানের কবর।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে