Bangladesh+Bank

বিডি নীয়ালা নিউজ(৫জানুয়ারি১৬)- অনলাইন প্রতিবেদনঃ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর সম্পদের অপচয়, জালিয়াতি রোধ ও অনিয়ম বন্ধে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রচলন থেকে বেরিয়ে আসছে সরকার।

২০১৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি ব্যাংকের ৩০ জন পরিচালকের পদ শুন্য রয়েছে। এর মধ্যে অগ্রণী, জনতা ও সোনালী ব্যাংকেরই ২১জন পরিচালক।

সোনালী ব্যাংকে ৬ জন পরিচালকের মধ্যে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক ও মোসলেম উদ্দিনকে নিয়োগ দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। এদের নিয়োগের জন্য অনুমোদন নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে সোনালী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনও পেয়েছে।

বিডিবিএল ব্যাংকের ৬ পরিচালকের মধ্যে অর্থবিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহবুদ্দিন আহমেদ এবং এখলাছুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংকে পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গকুল চাঁদ দাস। বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদনও পেয়েছেন তিনি। আরেক অতিরিক্ত সচিব মানিক চন্দ্র দেব নিয়োগ পেয়েছেন জনতা ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা ৭ জন। জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিসহ ৮ জন। সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা মাত্র ৮ জন। বিডিবিএল ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিসহ ১০ জন। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৭ জন পরিচালকের পদ শুন্য থাকলেও এখন পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়া হয়নি কাউকেই।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০০৯ সালের ১২ এপ্রিল জারি করা অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অর্থনীতিবিদ, সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ, আর্থিক বাজার, মুদ্রানীতি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তি, সাবেক ব্যাংকার, আইনজ্ঞ, ব্যবসায়ী এবং কমপক্ষে একজন নারী পেশাজীবীকে ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য নিয়োগ করতে হবে।

কিন্তু তা মানা হয়নি। বরং ‘সমাজসেবক’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকেই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়েছে।

আর এ কারণেই বর্তমান সরকারের পরপর দুই মেয়াদেই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকিং খাতে ‘হল-মার্ক’ ও ‘বিসমিল্লাহ’র মতো বহুল আলোচিত কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংকে ছোট-বড় অসংখ্য কেলেঙ্কারির ঘটনা তো রয়েছেই। এসব আর্থিক কেলেঙ্কারির দায় অনেকাংশেই ওইসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ওপর বর্তায়। কারণ, ব্যাংক খাতের বিভিন্ন কেলেঙ্কারির সঙ্গে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া পর্ষদ সদস্যদের নাম আলোচনায় এসেছে।

ব্যাংকিং খাতে ‘হল-মার্ক’ ও ‘বিসমিল্লাহ’র মত ঘটনা ভবিষ্যতে যেন আর কোনোদিন না ঘটে সেজন্য রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালক নিয়োগ না দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত আমলা ও সাবেক ব্যাংকারদের নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

আর এ কারণে অধিকাংশ পরিচালকের পদ শুন্য থাকলেও এখন পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গকুল চাঁদ দাস বলেন,রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের শুন্যপদগুলো পূরণে শিগগির পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে।

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে