ডেস্ক রিপোর্টঃ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের রাজনীতির তীব্র সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চা এবং জনগণের ওপর আস্থা রাখার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটা কথাই বলবো যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তাহলে নানা কথা না বলে গণতন্ত্রের চর্চা করুন। সেটাই বাস্তবতা।’
ভিন্ন পথে ক্ষমতা দখলে বিএনপি’র অপচেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেজন্য তারাতো চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোন সাড়া লাভে ব্যর্থ হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) যাদের ওপর আশা করেন, তারাও এতে সাড়া দেবে না।’
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁর ভাষণে, দেশের উন্নয়নের ধারা এবং ২১ বছর পর যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারসহ বিভিন্ন হত্যাকান্ডের বিচার শুরুর মাধ্যমে দেশে যে সামাজিক ন্যায় বিচারের ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাকে অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের স্বúক্ষের শক্তিকে ভোট দিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার জন্য দেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার (বেগম জিয়া) এমন একটা চেষ্টা যে এমন কিছু হোক যেন তাকে (তৃতীয় কেউ) তারা নাগর দোলাতে চড়িয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। ওই আশাও এখন দুরাশা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে তারা (বিএনপি) প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তিনি তাদের ডেকেছেন তারা আলোচনা করবেন। রাষ্ট্রপতি সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন। আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস জনগণের ওপর আছে। আমরা জনগণের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করেছি। সেজন্য জনগণের ওপর আমরা কখনও বিশ্বাস ও আস্থা হারাই না। কাজেই জনগণই আমাদের মূল শক্তি। সেটাই আমি বিশ্বাস করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে উন্নয়নের ধারা তাঁর সরকার সূচনা করেছে তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, একই সাথে মক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তুলছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, ১৫ আগস্টের খুনীদের বিচার করেছি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার হচ্ছে। এরকম বহু অন্যায়-অপরাধ এবং জঙ্গিবাদের বিচার চলছে। কাজেই এগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। আর আজকে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প শুরু হয়েছে সেগুলোর বাস্তবায়ন ঘটিয়ে বাংলাদেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে চাই। আর্থ-সামজিক উন্নয়নের চলমান গতিকে আমরা ধরে রাখতে চাই। এদেশে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কুষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান ও শাহে আলম মুরাদ বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যারা এখনও দেশের সেবা করে যাচ্ছি এবং আওয়ামী লীগসহ আমাদের জোট এবং সহযোগী স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি। আমাদেরকে জনগণ যদি ভোট দিয়ে আবার নির্বাচিত করেন তাহলে এই ধারাটা অব্যাহত থাকবে। রাজাকার- আল-বদর যাদের আমরা বিচার করেছি তারা আবার এদেশে যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে এদেশের মানুষের ওপর তারা ’৭১’র মতো ভয়াবহ গণহত্যা চালাবে।’
এসব করতে খালেদা জিয়ার এতটুকু যে দ্বিধা নেই, সেটা বাংলাদেশের মানুষ বোঝে।
জনগণের ওপর তাঁর বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি তাঁদের হাতে ক্ষমতা এলে দেশ ও জাতি কিছু পায়। জনগণও সেটা ভালোভাবে জানে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সকল সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ থেকেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। কাজেই যে মর্যাদাটা আজকে বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হয়েছে সেটা ধরে রাখতে হলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকেই আবারো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে।
এসময় মানুষ পুড়িয়ে হত্যাসহ, আন্দোলনে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত এবং একাত্তরের রাজাকার-আলবদরদের নিয়ে সরকার গঠন করে দেশের অর্থ বিদেশে পাচারকারি দুর্নীতিবাজ চক্রকে মানুষ কেন ভোট দেবে সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং ৩০ মার্চ বেগম খালেদা জিয়ার পদত্যাগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচনে কারচুপির জন্য জনগণের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল, তার মুখে আবার নির্বাচনে শুদ্ধতার কথা কোথা থেকে আসে?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এই দেশে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই দেশের জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে কেউ আর ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।’
দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস বিক্রির নিশ্চয়তা দিয়েই বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০১ সালের ভোটে জয়ী হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ওই নির্বাচনের আগে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের সরকারি বাসভবনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয় এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের উপস্থিতি তাকে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ বিক্রির প্রস্তাব দিলে তিনি তা প্রত্যাখান করে বেরিয়ে আসেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন সেখানে থেকে যান এবং তাদের মধ্যে এ সম্পর্কে রফা হয় ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চলে আসি। খালেদা জিয়া থেকে যান। জিমি কার্টার এতোই খুশি হন যে, খালেদা জিয়ার ঘাড়ে হাত দিয়ে সেই লাঞ্চ থেকে বের হন।’ যার ছবিও সে সময়কার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে ক্ষমতায় আসা আমার জন্য এতো কঠিন ছিল না, যদি আমি একটু কম্প্রোমাইজ করতাম। সেই কম্প্রোমাইজটা হল- আমার দেশের গ্যাস আমার দেশের মানুষের কাজে লাগাবো না, সেটা বিক্রি করে দেব।’
ওই প্রস্তাবে না করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি জাতির পিতার কন্যা। আমার দ্বারা এদেশের মানুষের এতোটুকু স্বার্থহানি হতে পারে না।’
পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন তাঁকে একবার সরাসরি প্রস্তাব দিলেও তিনি নাকচ করেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে গণতন্ত্র এনেছি সেই গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকলেই এদেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে পারবো, যেটা আমাদের মূল লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে খালেদা জিয়া ঘোষণা দিলেন তিনি নির্বাচন করবেন না। কারণ আমাদের উন্নয়নের গতি দেখেই তারা ভিত হয়ে যায়। তারা জানে জনগণ বিএনপিকে আর কখনও ভোট দেবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি। যারা যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সরকার গঠন করে, লাখো শহীদের রক্তাক্ত পতাকা তারা তুলে দিয়েছিল যুদ্ধাপরাধী হিসেবে যাদের সাজা হয়েছে, যাদের সাজা কার্যকর হয়েছে তাদের হাতে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া তাদের আহ্লাদ করে পতাকা ধরিয়ে দিয়েছিল। মন্ত্রী বানিয়েছিল। যারা ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান, চোরাকারবারি আর দুর্নীতি ছাড়া কিছুই দেশকে দিতে পারেনি। তাদের জনগণ কেন ভোট দিতে যাবে? ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচালের নামে শত শত মানুষ হত্যা করলো তারা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯২ দিন অফিসে বসেই তারা কি আন্দোলন করে। সেখানে বিরানীর প্যাকেট আনে আর খায়। সরকার উৎখাতের নামে অফিসে বসে আন্দোলনের নামে হুকুম দিয়ে মানুষ হত্যা করে। সরকার উৎখাত না করে নাকি আর ঘরে ফিরবে না। মানুষকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়। কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কোন মানুষকে এভাবে পুড়িয়ে মারতে পারে না। এখানে অফিসে বসে বসে হুকুম দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তার দল আর জামায়াত মিলে সাধারণ মানুষগুলোকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
বিএনপি’র ধ্বংস লীলার পরিসংখ্যান তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১ হাজার ৭৭০টা গাড়ি তারা পোড়ালো, আরো প্রায় ২ হাজার গাড়ি ভাঙচুর করলো। ১৮টি রেল, ৭০টি সরকারি অফিস তারা পুড়িয়ে দিল। ৬টা ভূমি অফিস পোড়ালো। লঞ্চ, রেল, সরকারি অফিস, বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোনকিছুই বাদ ছিল না। সব জায়গায় আঘাত করলো, পোড়ালো, মানুষ হত্যা করলো। রাস্তার পাশের হাজার হাজার গাছ তারা কেটেছে এবং আইন-শৃংখলা রক্ষকারি বাহিনীর ওপর তারা হামলা করেছে। ২০ জন পুলিশ সদস্য হত্যা করা হলো, বিজিবি সদস্যকে হত্যা করা হলো। ডিজিএফআই’র একজন অফিসারকে পর্যন্ত হত্যা করা হলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মায়ের সামনে ছেলেকে, স্ত্রীর সামনে স্বামীকে, বাবার সামনে তার সন্তানকে পুড়িয়ে মারলো। এই বীভৎস দৃশ্য কে সৃষ্টি করেছে? করেছে খালেদা জিয়া আর তার কুলাঙ্গার পুত্র। কাজেই একথা যেন দেশবাসী কোনদিন ভুলে না যায়। তারা (বিএনপি) এ ধরনের বীভৎস ঘটনা ঘটাতে পারে, মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে- এটাই নাকি তাদের আন্দোলন।
গণপ্রতিরোধে খালেদা জিয়ার তথাকথিত আন্দোলনের সমাপ্তি হলো উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যখন বের হয়ে এসে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলো তখন খালেদা জিয়া আন্দোলন ফেলে অফিস থেকে বের হয়ে নাকে খৎ দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে ঘরে ফিরে গেল।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, যে নির্বাচনেও পরাজিত, আন্দোলনেও পরাজিত তাকে ভবিষ্যতে দেশের মানুষ কেন ভোট দেবে?
পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরই স্বাধীন বাংলাদেশে ইতিহাস বিকৃতি আর হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতির সূত্রপাত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতো ইতিহাস বিকৃতি পৃথিবীর কোনো দেশে আর নেই।
তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা মুক্তিযুদ্ধের সময় কেউ কেউ খেতাবও পেয়েছেন। তবে তারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করতেন কি-না তা নিয়েই সন্দেহ আছে। কারণ, তারাই এদেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, পতাকা তুলে দিয়েছেন। আর তারাই এখন কী করে গণতন্ত্রের কথা বলেন?’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ভাষা আন্দোলন, ঐতিহাসিক ৬ দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাসহ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ভারতে শরণার্থী আশ্রয়, মুজিবনগর সরকার গঠনসহ স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার কিছু খন্ডচিত্রও তাঁর বক্তৃতায় উঠে আসে।
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ঊষালগ্নে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু যে নির্দেশনা দিতেন, প্রতিটি বাঙালি সেটি মেনে চলতেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
৯ মাসের মধ্যে দেশের জন্য সংবিধান প্রণয়ন, সম্ভ্রমহারা মা-বোন ও ৩ কোটি গৃহহীনের পুনর্বাসন, দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, বহির্বিশ্বের স্বীকৃতি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ অর্জনসহ দেশের প্রাকৃতিক ও খনিজসম্পদ রক্ষায় জাতির পিতার পদক্ষেপের প্রসঙ্গও তাঁর বক্তৃতায় উঠে আসে।
বিজয় দিবসে শুক্রবার বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে যানজটে পড়েন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল আমি যখন যাচ্ছিলাম, আমি ট্র্যাফিক জ্যামে পড়ে যাই। আমি গর্বিত, এবারের মতো এত মানুষের ঢল আগে দেখিনি। সব থেকে বড়ো কথা- যুবসমাজ, ছাত্র, জনতা সকলের অংশ গ্রহণটা ছিল চোখে পড়ার মতো।’
এবারের বিজয় দিবসে জনগণের মাঝে যে উল্লাস ও উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখতে পেয়েছেন তাঁর প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটাই আশার আলো দেখাচ্ছে যে, আমার ৫০ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, এখন আর কেউ বাংলার মানুষকে বিকৃত ইতিহাস গেলাতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজয়ের চেতনাকে আমাদের ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধে যে আকাক্সক্ষা নিয়ে লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে এদেশকে স্বাধীন করেছেন, আমাদের বিজয় এনে দিয়েছেন সেই বিজয়ের পতাকাকে আমাদের সমুন্নত রাখতে হবে।
বাংলার লাল-সবুজ পতাকা যেন বিশ্বে সব সময় মর্যাদা পেতে পারে, সেজন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করেন তাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী। আর এর মাধ্যমেই শহীদদের আত্মত্যাগকে প্রকৃত মর্যাদা দেয়া হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।
বি/এস/এস/এন