সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকারঃ জেলার তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউপির বস্তুল থেকে লাউশন পর্যন্ত দুই কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচা সড়ক দীর্ঘ ৬০ বছরেও পাকা করণ হয়নি। এলাকার কৃষি ফসলাদি পরিবহন ও দৈনন্দিন চলাচলের ক্ষেত্রে একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত সড়কটি জুড়ে কর্দমাক্ত আর মাঝে মধ্যে ছোট-বড় বহু গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই পথে যাতায়াতকারী আশ-পাশের দশ গ্রামের হাজাও মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বস্তুল বাজারের পাকা সড়কের গুচ্ছ গ্রাম মোড় থেকে প্রত্যন্ত লাউশন গ্রাম পর্যন্ত এলজিইডির এ সড়কটির পুরোটায় কাঁদা জমে আছে। অধিকাংশ স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় বহু গর্ত। কোথাও কোথাও আট-দশ ফিট পর্যন্ত গর্তের গভীরতা হাঁটুর ওপরে। এসব গর্তে সামান্য বৃষ্টিতেই দিনের পর দিন পানি জমে থাকছে। সড়কটি দিয়ে স্বাভাবিক যান চলাচল দুরের কথা, বেশ কিছু দিন ধরে পায়ে হেঁটে চলারও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

যাতায়াত এবং কৃষি ফসলাদি পরিবহনে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মহিষের গাড়ি। উপজেলা সদরে প্রবেশ পথ বস্তুল-ধোপাগাড়ি পাকা সড়কের সঙ্গে বস্তুল-লাউশন সড়কটির সংযোগ থাকায় এলাকাভিত্তিক সড়কটির বেশ গুরুত্ব রয়েছে। ফলে গ্রামীণ এ সড়কটির আশ-পাশের লাউশন, বস্তুল, পঁওতা, ক্ষির পঁওতা, তালম, গুল্টা, রানীদিঘী, বটগাড়ীসহ দশ গ্রামের প্রায় পঁঞ্চাশ হাজার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন।ব্যাপক হতাশা আর ক্ষোভ প্রকাশ করে এ জনপদের জিল্লুর রহমান, নুরুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, তহিদুর রহমান, মাহাবুর উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, হাফিজুর রহমানসহ নবীন-প্রবীন আরো অনেকে জানান, জন্ম থেকে তারা কাঁচা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন।

যুগের পর যুগ ধরে গ্রামীণ এ কাঁচা সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও পাকা করণের কোন উদ্যোগ নেই। সামান্য বৃষ্টি হলে ঘরের বাহির হতে পারেনা তারা। কর্দমাক্ত সড়কে বাধ্য হয়ে কেউ টোপলায় পরনের কাপর নিয়ে, কেউবা মহিষের গাড়ি করে রওয়ানা দেন দৈনন্দিন কর্ম ক্ষেত্রে। জরুরিভাবে কারো চিকিৎসার দরকার হলে তা আশাকরা একেবারেই অসম্ভব। সব থেকে মুশকিলে পড়েছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং বয়োবৃদ্ধ লোকজন। বেহাল সড়কে না চলাচল করে যানবাহন, না যায় পায়ে হেঁটে চলা। ছেলে-মেয়ে একদিন স্কুল-কলেজ থেকে ফিরলে কাঁদা লেগে পরের দিন সে পোশাক আর পরিধানের উপায় থাকেনা।

ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে যাতায়াতে বিঘ ঘটায় লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ছেন সব শিক্ষার্থী। তারা আরো জানান, কৃষি নির্ভর এ জনপদের মানুষকে ফসলাদি বেঁচা-কেনায় লোকসান গুণতে হচ্ছে। সবসময় বাজার দর থেকে প্রতি মন ধান আশি-একশ টাকা কমে বেঁচতে হয়। ফলে অর্থনৈতিকভাবেও দিন দিন পিছিয়ে পড়ছেন তারা। তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার জানান, টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। শিগগিরই পাকা করণের কাজ শুর হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে