জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকা বাংলাদেশ-ভারতের রেল যোগাযোগ তিন দিন আগেই শুরু হয়েছে। ঢাকা-কলকাতা ও খুলনা-কলকাতার মধ্যকার সেই ট্রেনগুলো চালুর পর বুধবার (১ জুন) ৫৭ বছর পর চালু হলো ঢাকা ও নিউ জলপাইগুড়ির (এনজিপি) ট্রেন যোগাযোগ।

‘মিতালী এক্সপ্রেস’ নামের এই ট্রেনটির মাধ্যমে ৫৭ বছর পর এই রুটে ভারত ও বাংলাদেশের ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হলো। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত এই রুটে ট্রেন চলাচল করেছে ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে। সে বছর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হলে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তৎকালীন ‘পূর্ব পাকিস্তান’ স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নামে বিশ্ব মানচিত্রে পরিচিতি পায়।

পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) থেকে যাত্রীবাহী ট্রেনটি বুধবার সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়, যেটি উত্তরবঙ্গের নীলফামারি জেলার চিলাহাটি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

বুধবার সকালে দিল্লিতে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের ভার্চ্যুয়াল ফ্ল্যাগ অফের পর নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছাড়ে। ঢাকায় এটির পৌঁছানোর কথা রাত দশটায়। দিল্লিতে ট্রেনটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার জানিয়েছেন যে, মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সপ্তাহে দুদিন উভয় প্রান্ত থেকে চলাচল করবে, মোট চারটি ট্রিপ থাকবে। বাংলাদেশ থেকে রওনা হওয়া যাত্রীদের ঢাকায় ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে আর ভারত থেকে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) স্টেশনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে।

রেলওয়ে থেকে আগেই একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিলো যে, মিতালী এক্সপ্রেস চালু হলে সপ্তাহে চার দিন এটি চলাচল করবে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সোম ও বৃহস্পতিবার ছেড়ে যাবে ট্রেনটি। অন্যদিকে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) থেকে রোব ও বুধবার ছেড়ে আসবে মিতালী এক্সপ্রেস। বাংলাদেশে আসার পথে হলদিবাড়ি ও চিলহাটি স্টেশনে ট্রেনটি থামার কথা রয়েছে।

নির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) থেকে বেলা পৌনে বারোটায় ছেড়ে এসে ঢাকায় পৌঁছাবে রাত সাড়ে দশটায়। অন্যদিকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে রাত সাড়ে নয়টায় ছেড়ে জলপাইগুড়ি পৌঁছাবে সকাল সোয়া সাতটায়।

রেল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বাসস জানিয়েছে, ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনটির সর্বোচ্চ ভাড়া হবে ৫২৫৫ টাকা। এটি এসি বার্থের টিকেটের মূল্য।

তবে যারা এসি সিটে যাবেন তাদের টিকেটের জন্য জনপ্রতি ৩৪২০ টাকা দিতে হবে। আর এসি চেয়ারে যারা যাবেন তাদের ২৭৮০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। আর পাঁচ বছর বয়সের কম যাত্রীদের ভাড়া হবে টিকেট মূল্যের অর্ধেক। এ ভাড়ার মধ্যেই ভ্রমণ কর অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে যাত্রীদের আর নতুন করে করের মুখোমুখী হতে হবে না। একজন প্রাপ্তবয়স্ক যাত্রী সর্বোচ্চ ৩৫ কেজি পর্যন্ত ওজনের মালামাল বিনামূল্যে বহন করতে পারবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে