দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। মঙ্গলবার (২৫ মে) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডিম ছাড়ে মা মাছ। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, হালদায় মঙ্গলবার রাতে মা মাছ পরীক্ষামূলক ডিম ছেড়েছে। পরিবেশ অনুকূল মনে হলে ভাটার সময় মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। আবার পরিবেশ অনুকূলে না হলে নাও ছাড়তে পারে। রাতে নমুনা ডিম ছাড়লে ও সকাল পর্যন্ত আর কোনো ডিম ছাড়েনি মা মাছ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হালদা গবেষক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদায় রাতে বেশ কিছু স্থানে মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়ছে। মা মাছ যদি পরিবেশ অনুকূল অর্থাৎ ডিম ফুটাতে পারবে মনে করে তাহলে ডিম ছাড়বে।

হালদার জেলেরা বলেন, আমরা অল্প করে নমুনা ডিম সংগ্রহ করলাম। আমাদের অভিজ্ঞতায় বলে- নমুনা ডিম জোয়ারে ছাড়লে পরের ভাটায় পুরোপুরি ডিম ছাড়ে। আবার নমুনা ডিম ভাটায় ছাড়লে পরের জোয়ারে মা মাছ ডিম ছাড়ে। তবে পরিবেশ অনুকূলে না হলে পরের জোয়ারে বা ভাটায় ডিম না ছেড়ে মা মাছে আরেকটি জোয়ারের অপেক্ষা করে।

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: প্রস্তুত নৌবাহিনীর ১৮ যুদ্ধজাহাজ

জানা গেছে, বছরের এপ্রিল থেকে জুনের যে কোনো সময় হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে- পূর্ণিমা বা অমাবস্যার তিথি বা জো থাকতে হবে। একই সময়ে নদীর স্থানীয় এবং খাগড়াছড়ি, মানিকছড়িসহ নদীর উজানে পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে হবে। ফলে পাহাড়ি ঢল নামবে এবং নদীতে ফেনাসহ পানি প্রবাহিত হবে। ঠিক এ সময়ে পূর্ণ জোয়ার শেষে অথবা পূর্ণ ভাটা শেষে পানি যখন স্থির হয় তখনই কেবল মা মাছ ডিম ছাড়ে।

গত এপ্রিল থেকে হালদা পাড়ের প্রায় পাঁচ শতাধিক জেলে ডিম সংগ্রহের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। বিশেষ করে জো চলাকালে তারা রাত-দিন নির্ঘুম থেকে ডিম ছাড়ার প্রহর গুনছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই তাদের অপেক্ষার অবসান হতে পারে।

খাগড়াছড়ির জেলার বাটনাতলী পাহাড় হতে নেমে সর্পিল ১০৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হালদা নদী মিলেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে। দেশের একমাত্র জোয়ার-ভাটার রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র এই নদীর সুরক্ষায় সরকার ইতোমধ্যে এটিকে বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ ঘোষণা করেছে।

SO/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে