সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকার ॥বঙ্গবন্ধু পশ্চিম মহাসড়কে যানজট খাকুক আর না থাকুক সর্টকার্টে সিরাজগঞ্জ শহরের বাইপাস সড়ক (নলকা খেকে সিরাজগঞ্জ শহর হযে সায়দাবাদ) দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪/৫ হাজার ভারী যানবাহন চলার কারণে জেলা শহরের বাজার স্টেশনে লতিফ মির্জা সড়কে, বাজার স্টেশনের সামনে, শহরের খেদন সর্দার মোড়ের, মালশাপাড়, কবড়স্থানের সামনে, ছোট-বড় গর্তে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে।এছাড়া জেলা সদরের চাঁদ আলীর মোড় থেকে যমুনার সার ঘাট, বালুর পয়েন্ট ও কয়েকটি ফ্লাওয়ার মিল থাকায় এই রাস্তায় ভারী যানবাবন প্রতিনিয়ত চলাচলের কারণে হোসনপুর দক্ষিণ স্কুলের সামনে হাটু সমান গর্ত পানিতে সারা বছরই ডুবেই থাকে। এ কারণে এইস্থানে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।

সিরাজগঞ্জ জেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক তারিক ইনাম পুলক অভিযোগ করে বলেন, সদর উপজেলার এটিই একমাত্র রাস্তা হওয়ার কারণে টিএনও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা এই বিপদজনক রাস্তা ব্যাবহার করলেও এ রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে তারা কেন উদাসীন তা আমাদের বোধগম্য নয়।সিরাজগঞ্জের সড়ক ও জনপদ বিভাগের আঞ্চলিক সড়ক গুলোর বেহাল অবস্থাই নয় বঙ্গবন্ধু পশ্চিম মহাসড়ক জুড়ে শুধু খানাখন্দে ভরা। বছরের পর বছর ধরে সওজের রাস্তা সংস্কার, মেরামত ও জোড়াতালির কাজ সারা বছর চললেও নেই কোনো টেকসই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও উদ্যোগ। মাঝে মাঝে মন্ত্রী ও সওজের বড় কর্মকর্তারা পরিদর্শনে এলে শুধু তড়িঘড়ি মেরামত করা হয়। কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার কয়েকদিন পরই আবার সেই পুরনো চিত্র।জেলার বেলকুচি ও এনায়েতপুরের রাস্তা, হাটিকুমরুল মোড় থেকে উল্লাপাড়া,

চান্দাইকোনা এবং দায়দাবাদ থেকে নলকা পর্যন্ত শহরের আঞ্চলিক বাইপাস রোডের বিটুমিন ও পাথরের মিশ্রনে উঠে ছোটবড় গর্তে পরিণত হয়েছে। হাটিকুমনরুল মোড়ে কয়েক মাস আগে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করার এক সপ্তাহ পর নতুন করে খানাখন্দ দেখা দেয়। এসব মহাসড়ক দিয়ে ঢাকা, উত্তরবঙ্গ, রাজশাহী ও খুলনার দিকে প্রতিদিন প্রায় ১৫-২০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। জেলার বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সড়কের উপরিভাগের পাথর ও বিটুমিনের মিশ্রণ উঠে গিয়ে শতাধিক ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।একই অবস্থা শিয়ালকোল-নলকা, তাড়াশ-রানীহাটি-বারুহাস,

তাড়াশ-নিমগাছী-ভুইয়াগাঁতী, উল্লাপাড়া-লাহিড়ী মোহনপুর আঞ্চলিক সড়কেও। জেলা মাসিক উন্নয়ন সভায় একাধিকরার এসব সড়ক নিয়ে সওজের দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। পরিকল্পনা থাকলেও বরাদ্দ নেই, এমন কথা বলে পাশ কাটিয়ে যান সওজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীরা। বেলকুচির পৌর মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে সয়দাবাদ থেকে বেলকুচি পৌরসভা হয়ে এনায়েতপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তায় শতাধিক স্থানে ছোট-বড় গর্তের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।উল্লাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মারুফ-বিন-হাবিব বলেন, হাটিকুমরুল মোড় থেকে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কে শ্যামলীপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তারই বেহাল দশা।

বছর জুড়েই সওজ এ মহাসড়কে জোড়াতালির সংস্কার কাজ চালালেও বর্তমানে খানাখন্দে ভরা। উল্লাপাড়া-লাহিড়ী মোহনপুর আঞ্চলিক সড়কেও সওজ প্রকৌশলীরা কয়েক বছর থেকে উদাসীন রয়েছেন।জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, বেলকুচি, উল্লাপাড়া ও রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কসহ বগুড়া-নগরবাড়ীর মহাসড়কে সওজের উদাসীনতার কারণ কী, তা আমাদের বোধগম্য নয়।সওজের উল্লাপাড়া সাব-ডিভিশনের উপবিভাগীয় প্রকোশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, সড়ক সংস্কার কাজ শিগগির শুরু হবে।সিরাজগঞ্জ সদর-বেলকুচি সাব ডিভিশনের উপবিভাগীয় প্রকোশলী আনোয়ার পারভেজ বলেন, সয়দাবাদ-বেলকুচি-এনয়েতপুর,

সিরাজগঞ্জ-কড্ডা ও কড্ডা-সমেশপুর আঞ্চলিক সড়ক মেরামত ও সংস্কারে প্রায় ২৭ কোটি টাকার প্রকল্প দেওয়া হলেও তা এখনো পাস হয়নি।সিরাজগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকোশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, হাটিকুমরুল মোড়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি সেকশন বা ভাগে ‘ক্লোভার-লিফ’ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নলকা থেকে সিরাজগঞ্জ শহর হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে মুলিবাড়ি পর্যন্ত চারলেন রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে।সওজ রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু রওশন বলেন, উল্লাপাড়ার বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের খানাখন্দ সংস্কার ও মেরামত করার জন্য এরই মধ্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে