সিরাজগঞ্জ থেকে, মারুফ সরকারঃ সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকলেও পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় ৪৮ হাজার পরিবারের তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে রয়েছেন। ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষগুলো গরু-ছাগলের সাথে একঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

পানিবন্দী মানুষের মাঝে জেলা প্রশাসন থেকে ৩১৮ মেট্টিক টন চাল ও নগদ নয় লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো বাহুকা, শুভগাছা, খোকশাবাড়ী ইউপির শৈলাবাড়ী ও ব্রাহ্মনবয়ড়ায় ত্রাণ বিতরণ করা হলেও অনেক পরিবার বঞ্চিত রয়েছে। এসব মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়াও জেলার ৬৭টি বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পড়াশোনার চরম ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে, বন্যার কারণে জেলার প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর ফসলের জমি নষ্ট হওয়ায় শতাধিক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুভগাছার টুটুলের মোড় ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নেতা প্রতিবন্ধী হাসনা হেনা জানান,

বন্যার কারণে বাঁধে আশ্রয় নেয়া অনেকেই চাল ও টাকা পেয়েছে। কিন্তু আমার বসতবাড়িও পানিতে তলিয়ে গেলেও এখনো ত্রান পাইনি। তার মতো একই অভিযোগ অনেক পরিবারের। ওয়াপদাবাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষের টয়লেট ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ পানির সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে। আর সার্বক্ষনিক পানিত চলাফেরা করায় পানিবন্দী অনেক মানুষের হাত-ঘাসহ পানিবাহিত রোধ দেখা দিয়েছে। এদিকে যমুনা নদীর সাথে সাথে আভ্যন্তরীন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, সকালে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থা কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসে বসে না থেকে সরেজমিনে গিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

আর বিভিন্ন দপ্তরের কাছে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য না থাকায় তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরনের জন্য ওয়াটার প্লান্ট থাকা সত্বেও বন্যার্তদের জন্য পানি সরবরাহ না করায় গণস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে ভৎর্সনা করা হয়। তবে জেলা প্রশাসক কামরুন নাহারের দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রী তাৎক্ষণিক বর্নাতদের জন্য ৩শ মেটিক টন চাল, নগদ ১০ লক্ষ টাকা ও বন্যা পরবর্তীতের ৫শ বান টিন বরাদ্দ দেন।

অন্যদিকে, বাহুকায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ পাউবো গত দুদিন ধরে চেষ্টা করেও সংস্কার করতে না পারায় লোকালয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় বাহুকা, ইটালী, চিলগাছা ও গজারিয়া এলাকার নতুন নতুন বসতবাড়ী প্লাবিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা জানান, সর্বনিম্ন ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া বন্যা মোকাবেলার সকল প্রস্তুতি জেলা প্রশাসনের রয়েছে। সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেলের মাধ্যমে বন্যার্তদের খোঁজ-খবর নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে