সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকার: সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউপির ভার্নারেবল গ্রুপ ডেপলভমেন্ট (ভিজিডি) কার্ডের চাল দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ না করে ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্যরা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। বাধ্য হয়ে উপজেলা প্রশাসন ওই ইউনিয়নে চাল বিতরণ স্থগিত রেখেছে।

ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে তাদের কার্ডসহ না পাওয়া চাল ফেরতের দাবি জানিয়েছেন।জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসের তত্বাবধানে ২ হাজার ৫৮০ জন দুঃস্থ মহিলাকে সিলেকশন করা হয়। প্রত্যেক কার্ডধারীকে দুই বছরে প্রতিমাসে ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে প্রত্যেককে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে। গত ছয়মাস ধরে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হলেও সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের ২৩৬ জনের মধ্যে অধিকাংশ নারীরা এ কার্ড হাতে পায়নি।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বর কার্ডগুলো ডিলারদের কাছে বিক্রি করে দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ অবস্থায় কয়েকদিন আগে ইউনিয়ন পরিষদের চাল বিতরণের সময় কার্ডধারী কয়েকজন নারী কার্ড না পেয়ে পরিষদে এসে হট্টগোল শুরু করে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাল বিতরণ স্থগিত করে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। অন্যদিকে,বিষয়টি জানাজানি হবার পরই ইউপি চেয়ারম্যান কার্ড ধারীদের ২-৩ হাজার টাকা নগদ দিয়ে তারা কার্ড বিক্রি করেছে-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সামনে এমন কথা বলতে বাধ্য করছেন।কার্ডধারী ছুরফা খাতুন, শিউলী খাতুন, লাভলী খাতুন, রাবেয়া খাতুন,

শাহিদা খাতুন, মমিনা বেগম, রেশমা খাতুন, মরিয়ম খাতুন ও হনুফা খাতুনসহ অনেকেই অভিযোগ করে জানান, ভিজিডি কর্মসূচির জন্য দুঃস্থ মহিলা নির্বাচনের চুড়ান্ত তালিকায় আমাদের নাম থাকলেও গত ৬ মাসে কার্ড ও বরাদ্দকৃত কোন চালই আমাদেরকে দেয়া হয়নি। চেয়ারম্যান-মেম্বররা আমাদেরকে না দিয়ে ব্যাপারীদের নিকট বিক্রি করে দিয়েছেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক এক ইউপি সদস্য জানান, ইউনিয়নে সিংগাবিল, কাটেঙ্গা, ক্ষুদ্র কাটেঙ্গা, কুড়িপাড়া গ্রামের সাথী, কহিনুর খাতুন, শিরিয়া, রুমা, মনোয়ারা খাতুনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নারীর নামে কার্ড থাকলেও তাদের দেয়া হয়নি।

এমনকি তাদের নামে যে কার্ড ইস্যু হয়েছে তারা এখন পর্যন্ত জানেনই না। ইউপি সদস্যদের অভিযোগ মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কার্ড বিতরণ করার কথা থাকলেও তারা অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিয়ে উপস্থিত থাকছে না।কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জানান, মেম্বররা কার্ড বিতরণে কিছুটা অনিয়ম করেছে। আমি বিষয়গুলো সমাধান করার চেষ্টা করছি। তাছাড়া তালিকায় নাম আছে কিন্তু কার্ড পায়নি তাদেরকে ২ থেকে ৩ হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে।

উপজেলা ভিজিডি কমিটির সদস্য সচীব ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহিমা আল আশরাফ জানান, যারা অভিযোগ করেছিল কার্ড পাইনি। কিন্তু তদন্তের সময় তারাই আবার বলছে আমরা কার্ড পেয়ে বিক্রি করে দিয়েছি। এক্ষেত্রে আমরা কি করবো? তারপরেও আমরা কার্ডধারী ছাড়া কাউকে চাল বিতরণ করছি না। এখনো প্রায় ২৫৫ জনের চাল বিতরণ হয়নি।উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মাদ রায়হান জানান, তদন্তে অনিয়মের বিষয়টি প্রমানিত হয়েছে। তাই কার্ডধারী ছাড়াও কাউকে চাল না দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে