বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলে সরকার আবারও মূল্য সমন্বয় করবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় সরকার নিরুপায় হয়ে দেশের বাজারে দাম বাড়িয়েছে।

রোববার (৭ আগস্ট) সকালে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য অস্থিতিশীল হয়ে ওঠেছে। এতে ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারেও প্রভাব পড়ছে। প্রতিনিয়ত লোকসান গুনছে বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশন)। প্রতিবেশী দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পাচারের আশঙ্কা ছিলো। এছাড়া বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিপিসির লোকসান ছিল প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। এ প্রেক্ষাপটেই সরকারকে বাধ্য হয়ে মূল্য সমন্বয় করতে হয়েছে।

বিভিন্ন দেশে জ্বালানি তেলের বর্তমান বাজারমূল্য তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মিয়ানমারে ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ১১২ টাকা ৫৬ পয়সা, ভারতে ১১৪ টাকা, শ্রীলঙ্কায় ১১৭ টাকা ৪৯ পয়সা, আরব আমিরাতে ১২২ টাকা ৮০ পয়সা, নেপালে ১২৭ টাকা ৮২ পয়সা, সিঙ্গাপুরে ১৮৯ টাকা ৭৮ পয়সা এবং হংকংয়ে ২৬০ টাকা ৭৫ পয়সা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার গত বছরের ৪ নভেম্বর জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করে। এর আগে ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় স্থানীয় বাজারেও ডিজেলের দাম কমানো হয়েছিল। ভবিষ্যতেও বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশের বাজারে দাম কমিয়ে সমন্বয় করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এ কথা সত্য, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়ে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে। সরকার এ বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রেখে নেতিবাচক প্রভাব নিম্নপর্যায়ে রাখতে সচেষ্ট।

স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনমান, কৃষি উৎপাদনসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতসমূহে বিভিন্ন ধরনের সাপোর্ট কর্মসূচির আওতা বাড়ানোর বিষয়গুলো সরকার বিবেচনায় নিচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে বিশ্ববাজারে শিগগির জ্বালানির দাম স্থিতিশীল হতে শুরু করবে। সেটা আমাদের জন্য আশার বার্তা বয়ে আনবে।

ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া সমন্বয় করা হয়েছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো সমন্বয়কৃত ভাড়ার অতিরিক্ত দাবি করবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

‘সরকার দানবে পরিণত হয়েছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আসলে এদেশে মানুষ হত্যা, জনগণের সম্পদ নষ্ট করা এবং জীবন্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে বিএনপিই মূর্তিমান দানবে রূপ নিয়েছে। যারা হত্যার রাজনীতিতে হাতেখড়ি দিয়ে রাজনীতি শুরু করে তারাই দানব, তারা দানবের চেয়েও ভয়ংকর। যাদের দুর্নীতির দুর্গন্ধে ভূত পালায়, তারাই সরকারের সব কাজে দুর্নীতির দুর্গন্ধ খুঁজে বেড়ায়।

Jag/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে