তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলছেন, বিএনপি ক্রমাগতভাবে সবকিছুতে ‘না’ বলছে। এটি গণতন্ত্রকে ‘না’ বলার শামিল।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইল বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেভাবে সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসেছেন, এমন অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ার উদাহরণ অনেক পুরনো গণতান্ত্রিক দেশেও কেউ দিতে পারবে না। বিএনপি ঘরোনার বুদ্ধিজীবীরা এবং যারা বিএনপির পক্ষে সারাক্ষণ কথা বলেন তারাও সেখানে গেছেন। তারা বলেছেন- বিএনপির আসলে নাম দেওয়ার কথা ছিল। এই যে সবকিছুতে বিএনপি ‘না’ বলছে, এটি গণতন্ত্রকে ‘না’ বলার শামিল।

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদলের সভাপতিত্বে পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কাশেম হুমায়ুন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এই যে একটি দল গণবিরোধী রাজনীতি করছে, সেটি গণমাধ্যমে সেভাবে ফুটে উঠছে না। তারা কোনো জায়গায় ‘ফুঁ’ দিলেও গণমাধ্যমে বড় করে তুলে ধরা হয়। আবার আমি কোনো রাজনৈতিক সভায় গেলে দেখি গণমাধ্যমের সবাই হাজির। সাংবাদিকদের এবং সাংবাদিকতা বিষয়ে অনুষ্ঠানে আরো বেশি আসার প্রয়োজন থাকলেও সেটি হচ্ছে না, যা ভাবা দরকার।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় করোনাকালে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে যেভাবে ছয় কোটি টাকা করোনাকালীন সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে এটি আশপাশের কোনো দেশে দেওয়া হয়নি। এই বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কখনো দলীয় আনুগত্য বিবেচনা করিনি। আমি সবসময় বলেছি, যারা প্রেসক্লাবের সামনে সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন কিংবা পত্রপত্রিকায় আমাদের বিরুদ্ধে কলাম লেখেন কিংবা টকশোতে গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তিনি যদি এর মধ্যে পড়েন, তাহলে তাকেও সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে।  

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের আলোকবর্তিকার মতো কাজ করেন। আামাদের দেশে স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশ গঠন সবক্ষেত্রেই সাংবাদিকরা অনেক ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু আজ যখন গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে তখন দেখা যাচ্ছে অনেক ভূঁইফোড় সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের জন্ম হয়েছে। এতে প্রকৃত সাংবাদিকদের বদনাম হচ্ছে। এটির অবসান হওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, আমরা নীতিগতভাবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সাংবাদিকদের ডাটাবেজ করা দরকার। সেই কাজটি প্রেস কাউন্সিলকে করার জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি। তারা যদি নীতিমালার ভিত্তিতে ডাটাবেজ তৈরি করেন তাহলে প্রকৃত সাংবাদিকরা ডাটাবেজে স্থান পাবেন। যারা প্রকৃত সাংবাদিক নয়, ভূঁইফোড়, তারা ডাটাবেজে স্থান পাবেন না। তখন শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ধাপের বরাদ্দে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান হিসেবে সারাদেশের ৩০৪ জন সাংবাদিকের জন্য দুই কোটি ৭৬ লাখ টাকা বিতরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকা জেলার ১২৪ জন সাংবাদিকদের মাঝে দুই কোটি নয় লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন অতিথিরা। পাশাপাশি এদিন করোনা অনুদানের দ্বিতীয় পর্যায়ের অংশ হিসেবে সারাদেশের ৫৩০ জন সাংবাদিকের মাঝে ৫৩ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।

বিকেলে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং জাপানের বৈদেশিক বিনিয়োগ সংস্থা জেটরো আয়োজিত আলোচনা সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দুই দেশের দীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উত্তরোত্তর জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।  

ban/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে