ডেস্ক রিপোর্ট : ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি বর্তমান স্থানে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যাপারে তাদের দেয়া আগের আপত্তি তুলে নিয়েছে।বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার পোল্যান্ডের ক্রাকাউয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের ঝুঁকির তালিকা থেকে সুন্দরবনের নাম বাদ দেয়া হয়।প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রমের নেতৃত্বে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরার জন্য সভায় অংশ নিয়েছেন।ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ২১ সদস্য ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় কোন দেশের কোন্ সাংস্কৃতিক বা প্রাকৃতিক স্থান অন্তর্ভূক্ত হবে, অন্তর্ভূক্ত তালিকার মনিটরিং ও কোন দেশের কোন ঐতিহ্য ঝুঁকিতে থাকলে তার তালিকা তৈরি করে।

সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে বিশ্বের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে স্থান হিসেবে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অন্তর্ভূক্ত হয়।সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি সুন্দরবনের ঐতিহ্যকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও এর উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলে।এই ইস্যুতে সুন্দরবনে স্বচ্ছ পানি প্রবাহ এবং তাতে অনধিকার প্রবেশ প্রতিরোধ ও সম্পদ রক্ষাসহ রামপালে সরকারের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপত্তি তোলে।এর আগে, ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর একটি রিঅ্যাকটিভ মনিটরিং মিশন রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে তা সুন্দরবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছিল।

দীর্ঘ পর্যালোচনা শেষে এই কমিটি প্রয়োজনীয় উপশমমূলক পদেক্ষপ গ্রহণসহ বর্তমান জায়গায় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে।বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ যে কতিপয় পদক্ষেপ নিয়েছে কমিটির সিদ্ধান্তে তাকেও স্বাগত জানানো হয়েছে।কমিটির অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সুন্দরবনসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটা ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল এ্যাসেসমেন্টের (এসইএ) উদ্যোগ গ্রহণে সম্মত হয়েছে।ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী কমিটির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশ সরকারকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে সর্বোচ্চ ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করার জন্য কমিটির সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

তিনি সুন্দরবনের অসামান্য বৈশ্বিক মূল্য রক্ষায় বাংলাদেশের পূর্ণ সহযোগিতার বিষয়েও কমিটিকে নিশ্চিত করেন। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাস এবং ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোর স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শহীদুল ইসলাম।বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইউনেস্কোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বাসস’কে তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ইউনেস্কোর সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে রামপালে বর্তমান জায়গায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কোন বাধা নেই।তিনি আরো বলেন, ‘তাছাড়া ইউনেস্কো এই প্রকল্পের গুরুত্ব অনুধাবন করেছে এবং তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।’

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে