সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকারঃ ১৬ জুলাই,রবিবার । ঘড়ির কাটায় ঠিক রাত ৭ টা। চার দিনের অবিরাম পরিশ্রমে ক্লান্ত মলিন মুখখানা বিজয়ের হাসিতে উজ্জল হয়ে উঠলো সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমামের। যমুনার ঘুর্ণিপাক ও প্রচন্ড  সূর্যের  রাত পরাস্ত করে চার দিন পর অবশেষে বাহুকার ভাঙ্গন স্থান ক্লোজ করা হয়েছে। এ যেন একজন ক্রিকেটমোদীর কাছে বিশ্ব কাপ জয়ের মতো আনন্দের খবর। এ বিজয় যেন প্রকৃতির বৈরী আচরণের বিরুদ্ধে অক্লান্ত শ্রম ও বুদ্ধিবৃত্তির বিজয়। এ বিজয়ে কোন রানার্স আপ নেই।

১৩ জুলাই রাত সাড়ে আটটায় বাহুকায় নবনির্মিত রিং বাঁধ সংলগ্ন সড়ক বাঁধ ভেঙে প্রচন্ড বেগে যমুনার পানি বাঁধ অভ্যন্তরের বাড়ি-ঘর প্লাবিত করে। বাঁধ সংলগ্ন বাহুকা, ইটালী ও গজারিয়ার শতাধিক বাড়ি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। প্রায় ১৫ হাজার মানুষ তাৎক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাতের অন্ধকারে আকস্মিভাবে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় মানুষ জন আতংকিত হয়ে পড়ে। তাদের আর্ত চিৎকারে রাতেই বাহুকার মানুষ বাঁধ ভাঙ্গা স্থানে জড়ো হয়ে স্বেচ্ছায় শ্রম দিতে থাকে ভাঙ্গন রোধের জন্য। কিন্তু না, কিছুই করা যায়নি। রাক্ষুসী যমুনা যেন রুদ্্র মুর্তি নিয়ে লোকালয়ে ঢোকার চেষ্টা করে।

খবর পেয়ে ভোর রাতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর, পানি উন্নয়ন বিভাগ, পুলিশ, ঠিকাদার শ্রমিক সাথে নিয়ে ভাঙ্গন স্থানে প্রতিরোধ বুহ্য গড়ে তোলে। এলাকার মানুষও তাদের সহায়তা করে। ছুটে আসেন সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রউফ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহা পরিচালক প্রকৌশলী মোসাদ্দেক হোসেন, রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলী, বগুড়া জোনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্র শীল। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বিভাগের স্থানীয় উপভিাগীয় প্রকৌশলী ফজলুল হক, উপসহকারী প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম, রহ্জিত সরকার, মাসুদ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রকৌশলী ও কর্মচারী বৃন্দও মাঠে দিন রাত কাজ করেছেন। তাদের এ অক্লান্ত ও অমানবিক পরিশ্রমে এ অঞ্চলের মানুষ আপাতত নিরাপদ। আমাদের বিশ্বাস সিরাজগঞ্জবাসী বর্ষা মৌসুমে নিরাপদ থাকবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে