nirmolendu1434874741

বিডি নীয়ালা নিউজ(২৩ই মার্চ১৬)-অনলাইন প্রতিবেদনঃ সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য নির্মলেন্দু গুণ পাচ্ছেন স্বাধীনতা পদক। তবে এই স্বাধীনতা পদকের জন্য তাঁকে কম চেষ্টা করতে হয় নি। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এই পদক পাওয়ার প্রত্যাশা করে এলেও সরকার তাকে পদক দিচ্ছিল না।

শেষ পর্যন্ত তিনি ফেসবুকে পদক না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। সে ক্ষোভেরই প্রতিফলন ঘটল- এ বছর স্বাধীনতা পদকের জন্য তাঁকে মনোনীত করেছে সরকার। অবশ্য নির্মলেন্দু গুণ ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি এবং ২০০১ সালে একুশে পদক পুরস্কার অর্জন করেন।

নির্মলেন্দু গুণ ১০ই মার্চ নিজের প্রতি শেখ হাসিনা সরকারের অবহেলা’র কথা উল্লেখ করে একটি স্ট্যাটাস দেন যে স্ট্যাটাসে তিনি নিজের জন্য স্বাধীনতা পুরস্কার দাবী করেছিলেন।স্ট্যাটাসটি নিচে দেওয়া হলো-

আমাকে স্বাধীনতা পদক দিন

বাংলাদেশের প্রথম সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান 1976 সালে একুশে পদক প্রবর্তন করেন। বঙ্গভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে প্রথমবারের মতো একুশে পদক প্রদান করা হয়।
পরে কবি জসীম উদ্দীন ও বেগম সুফিয়া কামাল একুশে পদকে ভূষিত হন।
অজানা কারণে আমি ঐ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত অতিথি ছিলাম। কিন্তু তৎকালীন কেবিনেট সচিব শফিউল আজম একুশে পদকের মানপত্রটি ইংরেজীতে পাঠ করার প্রতিবাদ জানালে আমাকে বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে বের করে দেয়া হয়। তাই পুরো অনুষ্ঠানটি আমার দেখার সুযোগ হয়নি, যদিও আমার নিমন্ত্রণ পুরো অনুষ্ঠানের জন্যই বৈধ ছিলো।

সম্ভবত পরের বছর (1977) স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে জেনারেল জিয়া একুশে পদকের পাশাপাশি “স্বাধীনতা পদক” চালু করেন।

জিয়ার সবই খারাপ বিবেচনায় জেনারেল জিয়ার বাকি অনেককিছু পরিত্যাগ করলেও তাঁর প্রবর্তিত একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক প্রদানপ্রথাটি শেখ হাসিনা ত্যাগ করেননি।এই পুরস্কার দুটি চালু রাখা হয়।
ফলে এক পর্যায়ে 2000 সালে শেখ হাসিনার সরকার আমাকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করে।
কিন্তু সেই পদক তিনি নিজহস্তে আমাকে প্রদান করে যেতে পারেননি। তখন নিয়ম ছিল প্রাপকের নাম ঘোষণার পরের বছর পুরস্কার দেয়া।
2001 সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন এবং ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া হাসিমুখে আমাকে একুশে পদক প্রদান করেন।

তারপর 15 বছর কেটে গেছে। এর মধ্যে আট বছর কেটেছে শেখ হাসিনার সরকারের। শেখ হাসিনা স্বাধীনতা পদকের মুলোটি আমার নাকের ডগায় ঝুলিয়ে রেখেছেন।কিন্তু কিছুতেই সেটি আমাকে দিচ্ছেন না। উনার যোগ্য ব্যক্তির তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হতে হতে আকাশ ছুঁয়েছে। কিন্ত সেই তালিকায় আমার স্থান হচ্ছে না।

আমার একদা সহপাঠিনী, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার দৃষ্টে আমি প্রথম কিছুকাল অবাক হয়েছিলাম– কিন্তু আজকাল খুবই বিরক্ত বোধ করছি। অসম্মানিত বোধ করছি। ক্ষুব্ধ বোধ করছি।
আমাকে উপেক্ষা করার বা কবি হিসেবে সামান্য ভাবার সাহস যার হয়, তাঁকে উপেক্ষা করার শক্তি আমার ভিতরে অনেক আগে থেকেই ছিল, এখনও রয়েছে।

পারলে ভুল সংশোধন করুন। অথবা পরে এক সময় আমাকে এই পদকটি দেয়া যাবে, এই ধারণা চিরতরে পরিত্যাগ করুন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে