ডেস্ক রিপোর্ট : পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) দেশের প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ১০ শতাংশেরও বেশি জমিতে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বাসসকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী বেজা সারা দেশে পরিবেশ বান্ধব অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ দেশের প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৫ শতাংশ জমিতে গাছ লাগাবে এবং কারখানার মালিকরা বাকি ৫ শতাংশে গাছ লাগিয়ে সবুজায়ন করবেন।
পবন চৌধুরী বলেন, সিটি গ্রুপ, টি কে গ্রুপ, মিসা গ্রুপ, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংকসহ অনেক গ্রুপ ও ব্যাংক সারাদেশে সবুজ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির জন্য বেজার উদ্যোগ বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, বেজা নিজস্ব উদ্যোগে গাছ লাগাচ্ছে, আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বৃক্ষরোপণের জন্য একটি মেগা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। অনেকগুলো সংস্থা ও ব্যাংক তাদের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) থেকে এই কাজে অংশ নিচ্ছে।
বেজা প্রধান জানান, মিরসরাই, সীতাকুন্ড ও ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে গঠিত চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরীতে পাশের রাস্তা, বাঁধ এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের অন্যান্য নির্বাচিত অঞ্চলে কমপক্ষে ১০ লাখ গাছ লাগানো হবে।
তিনি বলেন, ফলজ, ঔষধি ও কাঠ গাছসহ বিভিন্ন ধরণের গাছ লাগানো হবে। আমরা আশা করি, গাছগুলোতে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ফুল ও ফল দেবে, এতে শিল্প শহরটিকে সুন্দর দেখাবে।
পবন চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বেজা আগামী পাঁচবছরে কক্সবাজারের অধীনে মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া ইকো-ট্যুরিজম পার্কে বিভিন্ন জাতের প্রায় ১৫ লাখ গাছের চারা রোপণ করবে।
‘যেহেতু অবৈধভাবে গাছ কাটার কারণে ওই অঞ্চলে প্রায় ৪,০০০ একর জমির অনেক ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই, আমরা সোনাদিয়া দ্বীপের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা এবং এর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বীপ ও এর আশেপাশের অঞ্চলগুলোকে সবুজ রঙের সংরক্ষণ করে পর্যটন পার্কে পরিণত করব। এবছরের মধ্যে সোনাদিয়া ইকো-ট্যুরিজম পার্কে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্কে বেজা গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়ে ওই এলাকার ৩১৫ পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে। অঞ্চলটিতে যারা বনের উপর নির্ভরশীল তাদের জন্য বিকল্প জীবিকা তৈরী করছে বেজা।
তিনি বলেন, বেজা স্থানীয়দের জন্য মসজিদ ও স্কুলসহ সব সুযোগ-সুবিধার সমন্বিত পরিকল্পিত আবাসন তৈরী করতে যাচ্ছে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, পর্যটন পার্কে নির্মাণ কাজ শুরু করার এখনও কোনও উদ্যোগ নেয়নি বেজা। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করার পরে, বেজা অঞ্চলটি পরিবেশ বান্ধব পর্যটন পার্ক তৈরির কাজ শুরু করবে।
তিনি বলেন, গাছ লাগানোর সময় বেজা অঞ্চলটির মাটি ও পরিবেশের দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখছে। তাই, আমরা ওখানে সেইসব প্রজাতির চারা রোপণ করছি যেগুলো উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য উপযোগী।
পবন চৌধুরী জানান, আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, কুমিল্লা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলও বেজার নির্দেশনা অনুযায়ী বৃক্ষরোপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, বেজা আগামী পাঁচবছরের মধ্যে দেশের সবুজ শিল্পায়নে ও বৃক্ষরোপণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

B/S/S/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে