মারুফ সরকার, বিনোদন প্রতিনিধি: রাজধানীর প্রেক্ষাগৃহগুলো ঘুরে কথা হয়েছে দর্শকদের সঙ্গে। অনন্ত জলিল ও বর্ষা অভিনীত ‘দিন দ্য ডে’ ১০৭টি, শরিফুল রাজ ও মিম অভিনীত ‘পরান’ ১১ টি এবং রোশান ও পুজা অভিনীত ‘সাইকো’ ১৭ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। মাল্টিপ্লেক্সে ‘দিন দ্য ডে’ দর্শক সমাগম চোখে পড়লে ও অন্যটা তেমন একটা চোখে পড়ে নাই। এদিকে দিন দ্য ডে ছাড়া এক পর্দার প্রেক্ষাগৃহগুলোতে তেমন একটা দর্শক দেখা যায়নি।

এজের পরিবেশনায় ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমাটি নিয়ে প্রচার হয়নি কম। সিনেমাটি অনন্ত জলিল বলেন, গল্প, মেকিং, সাউন্ড, লোকেশন থেকে পোস্ট প্রোডাকশন সবকিছুতেই নতুনত্ব। বিশ্বে যা নতুনত্ব আছে, তাই আছে আমার সিনেমাতে।’

‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন ইরানি পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম। বাংলাদেশ ছাড়াও ইরান, তুরস্ক ও আফগানিস্তানে সিনেমাটির শুটিং হয়েছে।

এদিকে পরান ও সাইকো নিয়ে দর্শকদের সাথে কথা বলতে সরেজমিনে দেখা গেছে। মিরপুরের ২ স্থানীয় অরিফ বললেন, আমরা টাকা খরচ করে পরান সিনেমা দেখতে আসি, ঢাকাই সিনেমাকে ভালোবাসি বলে। কিন্তু সনিতে এসে দেখি কোন দর্শক নাই। ছবির যে প্রচারণা দেখলাম তাতে মনে হয়েছে ভালো ছবি। এসেই ছবি দেখে আশানুরূপ কিছু পেলাম না। যদি আমাদের ধোঁকা দেন, তবে আমরা কেন আর সিনেমা হলে আসব? এসব সিনেমা তো ইউটিউবে সার্চ করলে পাওয়া যায়। “

আরেক দর্শক অভিযোগ করলেন, “আমাদের এত বোকা ভাবে কেন, পরিচালকরা? আমরা কি মুর্খ? আমরা এসব ছবি আর দেখতে চাই। গল্প দূর্বল ছবি আর করবেন না আপনারা। “

এ প্রসঙ্গে ঢাকার আজাদ সিনেমা হলের নাম প্রকাশ না করা একজন বলেন , ‘ছবির চাহিদা ঈদে প্রচুর থাকে। এ সময় ছবি গুলো আমরা চালাতে ইচ্ছুক থাকি। এমন একটা ছবি চালাচ্ছি দুই দিন হয় কোন দর্শক নাই। এভাবে চললে ছবি নামিয়ে দিতে হবে। তারা শুধু ফেসবুকে যেভাবে রিভিউ দিচ্ছে। তারা কি হল ঘুরে দিচ্ছে। হলে দর্শক নাই সোস্যাল মিডিয়াতে প্রশংসা নিয়ে আছে। “

তবে এতে অভিনয়শিল্পীদের দোষ দেখছেন না দর্শক হাসান আলী । তিনি বলছেন, “শরিফুল-মীম বা রোশান পুজার কোনো দোষ নেই। তারা তো শুধু অভিনয় করে। দোষ হল পরিচালকের। তিনি যদি নাটকের মতো, সিনেমার গল্প হয়ে থাকে তাহলে তো এরকম হইবেই। তাই বুঝতে কষ্ট হয়েছে নাটক দেখলাম না সিনেমা। “

দেখতে আসা আনিসুর জানালেন, ‘যেভাবে সাইকোর কথা শুনলাম তাই লোভ সামলাতে পারলাম না। চলেই এলাম, সিনেমা দেখতে। কিন্ত ছবিটি দেখে হতাশ।”

এদিকে দিন দ্য ডে ছবিটি দেখে ফিরোজ মমতাজ , তাওহিদুল সিনেপ্লেক্সে সিনেমাটি দেখে এসে বললেন, অসাধারণ হয়েছে নির্মাণশৈলী। টিকিট কেটে এমন ঝা-তকতকে সিনেমাই তো আমরা দেখতে চাই। আবারও অনন্ত ও বর্ষার সঙ্গে জুটিটা দারুণ হয়েছে।

সনি সিনেমা হলে সিনেমাটি দেখতে আসা রুবেল, জাহিদ বললেন, “বর্ষাকে সিনেমাতে দারুণ লাগে। সে প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলো দারুণ। সেথেকেই তার ভক্ত। তাই কেমন করেছে মূলত সেটা দেখার জন্যই পারিবারিক দাওয়াত মিস দিয়ে এই সিনেমা দেখতে আসা। এসে দারুণ উপভোগ করছি।

স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণরাই যে ছবি দেখতে এসেছেন, এমন কিন্তু নয়। চাকরিজীবীদের অনেকেই সপরিবারে সিনেমা হলে চলে এসেছেন। মিরপুরের শেওয়াপাড়া থেকে ‘জাহিদ’ দেখতে আসা অনিকেত আরমান বললেন, “সারা বছরই চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকি। ছুটি মেলে কেবল ঈদ মৌসুমে। তাই সপরিবারে একটু বিনোদনের আশায় এলাম।

হল কর্তৃপক্ষও বলছে, ঈদের দিনগুলোতে ‘দিন দ্য’ দেখতে আসা দর্শকের সংখ্যা বিকাল ও সন্ধ্যার শোগুলোতেই বেশি। সিনেমাটির টিকিটও বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। ঈদের প্রথম সপ্তাহে সিনেমাটি কেমন যায়, তার উপর নির্ভর করবে সিনেমাটি পরবর্তী কয় সপ্তাহ এই প্রেক্ষাগৃহে চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে