ডেস্ক রিপোর্ট : দুই কোটি নতুন সদস্য করার টার্গেট নিয়ে গত ২০ মে শুরু হয় আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযান। গত দুই মাসে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার প্রায় ৪০টিতে শুধু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সদস্য পদ নবায়ন করা হয়েছে। শুরুই হয়নি কমপক্ষে ২০ জেলায়। আওয়ামী লীগের আন্দোলন সংগ্রামের হৃৎপিণ্ড-খ্যাত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগেই শুরু হয়নি এই কার্যক্রম। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণে সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কার্যক্রম শুরু এখনো এক মাস বা তারও বেশি দেরি হতে পারে বলে শীর্ষ নেতাদের কাছ থেকে আভাস পাওয়া  গেছে। সারা দেশে এখন পর্যন্ত কত লাখ সদস্য সংগ্রহ হয়েছে তার তথ্যও কেন্দ্র জানে না। কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই কোটি নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে গত মাসের পর্যবেক্ষণে মনে হচ্ছে, খুবই ধীরগতিতে, বলা যায় কচ্ছপ গতিতে চলছে সদস্য সংগ্রহ অভিযান। ২০১০ সালে এই অভিযান শুরু হলেও টার্গেট পূরণ করতে পারেনি ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

তবে সদস্য সংগ্রহ অভিযান সফলভাবে চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের সদস্য সংগ্রহ অভিযান সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। বৃহস্পতিবার বরিশালে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ৩০ হাজার মানুষের সমাবেশ হয়েছে। প্রত্যেক জায়গায় ব্যাপক সাড়া মিলছে। অনেক জায়গায় শুরুই হয়নি-এমন প্রশ্নের জবাবে, আমাদের অনেক সাংগঠনিক কাজ রয়েছে, বসে নেই। এখনই শুরু করতে হবে এমন কথাও নেই। জানা গেছে, জেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব ও নেতাদের উদাসীনতার কারণে অনেক জেলায় এখনো সদস্য সংগ্রহ অভিযান ও নবায়ন কাজ শুরুই হয়নি। খোদ রাজধানীতেই শুরু হয়নি। এ কার্যক্রম শুরু করতে আরও কয়েক মাস লাগতে পারে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখনো সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের কাজ শুরু করিনি। সামনে আগস্ট মাস, এ মাসে আমরা শোকের কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকব। সেপ্টেম্বর মাস বা যে কোনো সময় গণমাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানিয়ে কার্যক্রম শুরু করব। আর ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, আমরা যে কোনো সময় কার্যক্রম শুরু করব। দলের সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করাব।

তিনি যখনই সময় দেবেন-তখনই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করব। দলীয় সূত্র মতে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয় থেকে অনেক জেলা নেতা সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন ফরম নিয়ে গেছেন। কিছু জেলায় শুরু হলেও অনেক জেলায় তা করা সম্ভব হয়নি। অনেক জেলা রয়েছে, যেখানে সভাপতি-সম্পাদক কেউ কারও মুখ দেখাদেখি হয় না। দলীয় কর্মসূচি পালন করা হয় পৃথকভাবে। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব অনেকটাই প্রকাশ্যে। কয়েক দফা দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জেলা নেতাদের ডেকে ধানমন্ডিতে বৈঠক করলেও এখনো মেটেনি পুরনো দ্বন্দ্ব। তবে সম্পর্ক আগের চেয়ে শীতল বলে জানিয়েছেন শীর্ষ এক নেতা। সে কারণে এখনো কাজ শুরু হয়নি। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখনো সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হয়নি।

তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই শুরু করা হবে। সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের বই নেয়নি নাটোর জেলার নেতারা। এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল কুদ্দুস এমপি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী ৫ তারিখে মিটিং করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। তিনি বলেন, ৫২টি ইউনিয়ন, ৮টি পৌরসভা, ৭টি উপজেলায় কী পরিমাণ বই লাগবে হিসাব-নিকাশ করে আমি এবং সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্র থেকে বই সংগ্রহ করে তারপর বণ্টন করব। গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামসুল আলম হিরু বলেন, জেলার বিভিন্ন জায়গায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। তবে সদরে এখনো শুরু হয়নি বলেও জানান তিনি। সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, জেলায় পুরোদমে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। খুব দ্রুতই আমাদের টার্গেট পূরণ হবে।

ব/দ/প

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে