tista

বিডি নীয়ালা নিউজ(২৬ই ফেব্রুয়ারি১৬)-আসাদুজ্জামান সুজন (নীলফামারী প্রতিনিধি):   গজলডোবা ব্যারেজের মাধ্যমে তিস্তার সব পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় নদীর বুক এখন প্রায় ধু-ধু বালুচর। চোয়ানো পানিতে ক্ষীণধারায় যেটুকু পানি ( গড়ে ৫০০ কিউসেক) পাওয়া যাচ্ছে ব্যারাজের ৪৪টি গেট বন্ধ রেখে তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রধান খালে। তা দিয়ে কিছু জমিতে অনিয়মিতভাবে দেয়া হচ্ছে পানি। যা বোরো রোপার জন্য অপর্যাপ্ত। ফসল বাঁচাতে কৃষকরা ক্যানেলের পাশে সেচ পাম্প বসিয়ে ফসল বাঁচানোর প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছে।

উত্তরের ৬ জেলার সাড়ে ৪ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় দেশের বৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের। উদ্দেশ্য ছিল সবুজ প্রান্তর গড়ে তুলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা নিয়ে আসা। কিন্তু পানি অভাবে গত ১৮ বছরেও পূরণ হয়নি সেই স্বপ্ন। পানি শূন্যতার কারণে এই প্রকল্পের সবগুলো সেচনালা আজ অনেকটাই অরক্ষিত। আর কাঙ্ক্ষিত পানি না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে প্রকল্পের কৃষকরা।

উত্তরের নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলার ৩৫টি উপজেলায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করতে এই প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও নানান জটিলতায় প্রকল্পের প্রথম ফেজের কাজ শেষ হয় ১৯৯৮ সালে। প্রথম পর্যায়ে সেচযোগ্য এলাকা নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৩৫ হাজার হেক্টর জমি। কিন্তু ভারতের এক তরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে তা কমিয়ে আনা হয় ৬০ হাজার হেক্টরে। গত কয়েক বছর ধরেও সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। এবারে তা আরও কমিয়ে আনা হয়েছে ১০ হাজার হেক্টরে। এরপরেও পানি না পেয়ে ফসল বাঁচাতে বাধ্য হয়ে কৃষকরা বসিয়েছে সেচ পাম্প।

নীলফামারী চাঁদেরহাট এলাকার কৃষক তমিজ উদ্দিন, হারিজ মিয়া বললেন, ক্যানেলোত পানি না পেয়া হামরা ভুট্টা নাগাছি। তামাকু নাগাছি। যখন পানি পাছিনো তখন আবাদ কচ্ছিনো ধান। এবার পানিতো পাইনো না। প্রত্যেকদিনে শুনি এই বেলে পানির চুক্তি হয়ছে। হামরা মরি য্যায়াও বোধ পানির চুক্তি হইবে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই মৌসুমে চোয়ানো পানি দিয়ে মাত্র ১০ হাজার হেক্টর জমিতে পানি দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তাও দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিস্তা পানি চুক্তি না হলে আগামীতে এই প্রকল্পটিই বন্ধ হয়ে যাবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে