সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকার: জেলার তাড়াশ উপজেলা সদরে তাড়াশ বাজার এলাকার সঙ্গে বসবাস করেও প্রায় এক যুগ ধরে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাদের। পাড়ার কোন লোক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে যেতে পারেনা। কেউ একজন মারা গেলে তার মৃতদেহ বরস্থান বা শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। বেশি মুশকিলে পড়েছে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। বাঁশের সাঁকো থেকে পড়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রেখেছেন।

বিষয়টি বেশ কয়েকবার স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে লিখিত আকারে এবং মৌখিকভাবে জানিয়েছেন তারা।ভূক্তভোগীদের একজন স্কুল শিক্ষক মির্জা ফারুক আহমেদ জানান, তাড়াশ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে তাড়াশ দক্ষিণ পাড়া তফের আলীর বাড়ি পর্যন্ত আটশো ফুট জায়গার ওপর রাস্তা না থাকায় ৩৫টি পরিবারের লোকজনকে প্রতিনিয়ত যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাড়ার সাধারণ লোকজনের উদ্যোগে তৈরি চারশো ফুটের একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রায় এক যুগ ধরে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের। সুষ্ক মৌসুমেও একটি পুকুর পারের এক ফুটেরও কম প্রস্থ্যের সরু রাস্তার ওপর দিয়ে যাতায়াত করা খুবই কষ্টদায়ক।

কেউ একজন মারা গেলে তার মৃতদেহ বরস্থান বা শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে।তাড়াশ দক্ষিণ পাড়ায় বসবাসরত সাবেক ব্যাংক ম্যানেজার শ্রী সিবেন সরকার বলেন, পাড়ার এক দিদি সাবেক ইউপি সদস্য শ্রীমতি স্বরসতী রাণী কিছুদিন আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। পাশেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অথচ বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে তাকে হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। মূমুর্ষূ অবস্থায় তিনি বাড়িতে পড়ে আছেন। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হলে আর নিয়মিত হাসপাতালে ফলোআপ করানো গেলে হয়তবা তিনি সুস্থ হয়ে উঠতেন।বিপাকে পড়েছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। বাঁশের সাঁকো থেকে পড়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রেখেছেন।

পাড়ার বয়োবৃদ্ধ আর গর্ভবতী নারীরা রাস্তার অভাবে নিজ-নিজ বসতঘরে অনেকটা বন্দী সময় কাটাচ্ছেন।প্রতিবেদনটি তথ্য ও বাঁশের সাঁকোর স্থির চিত্র সংগ্রহে গেলে ভুক্তভোগী তাড়াশ দক্ষিণ পাড়ার ৩৫টি পরিবারের প্রায় দের শতাধিক মানুষ এ প্রতিবেদকের কাছে আক্ষেপ করে বলেন, প্রায় এক যুগকাল যাবৎ তারা একটি রাস্তার প্রতিক্ষায় রয়েছেন।

ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি তারা লিখিত আকারে এবং মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তবে কেবলই তারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে তাড়াশ দক্ষিণ পাড়া তফের আলীর বাড়ি পর্যন্ত আটশো ফুট রাস্তা নির্মাণের আশ্বাসই দিয়ে গেছেন!তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাবুল শেখ স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, প্রয়োজনে যৌথভাবে রাস্তাটি নির্মাণ করা যেতে পারে।উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক বলেন, স্থানীয় লোকজন মাটির ব্যবস্থা করে দিলে ওই স্থানটিতে আগামী বছর একটি প্রকল্প বরাদ্দ দিয়ে রাস্তা করে দেওয়া হবে।এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন জানান, সরেজমিনে বাঁশের সাঁকোর স্থানটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে