জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) জানিয়েছে, জাপানকে দিয়েই শুরু হবে অভিবাসন খাতে নতুন দিগন্তের।

সম্প্রতি আর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন জানান, কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করার চেষ্টা করছেন তারা।

জাপানে সাড়ে ৩ লাখ কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে ২ হাজার ৭৪০ জনকে। জাপানি ভাষা শেখানো থেকে শুরু করে কর্মীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে কাজ করছে ৪২টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

সূর্যোদয়ের দেশ জাপান, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ও শক্তিশালী অর্থনীতি দেশ এটি। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উন্নত দেশটির শ্রমবাজারে।

২০১৯ সালের আগস্টে ৫ বছরব্যাপী সাড়ে ৩ লাখ বিশেষায়িত দক্ষ কর্মী পাঠাতে জাপান সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। টোকিওতে দুই দেশের মধ্যকার স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী জাপানের ১৪টি খাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ এবং জাপানি ভাষায় পারদর্শী বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়। নিরাপদ কর্মপরিবেশ আর উচ্চবেতনে এসব চাকরিতে কর্মী পাঠাতে ৪২টি কারগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে ৩ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।

বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম বলেন, জাপানকে ঘিরে আমাদের শ্রমবাজার বিকাশের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এমআই জাপানের কাজের সৌন্দর্য হচ্ছে, যখন শ্রমিকরা প্রশিক্ষণে থাকেন, নিয়োগকারী তখন বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণরত অবস্থার তাদের তালিকার তৈরি করেন। অর্থাৎ কোনো দালালের কাছে যেতে হয় না, যাওয়া সময় কোনো টাকা লাগে না শ্রমিকদের। আর কর্মী যখন ফেরত আসেন তখন তারা বেতন ছাড়াও বাড়তি ৫ লাখ টাকা দিয়ে দেন শ্রমিকদের। যেন তিনি দেশে ফিরে কিছু করতে পারেন।

প্রবাসীকল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২৪ সালের মধ্যে ৫০ লাখ দক্ষ শ্রমিক বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আর এক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় গন্তব্য জাপানি জনশক্তি বাজার।

প্রবাসীকল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন বলেন, জাপান আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় গন্তব্যের একটি দেশ আমাদের কর্মীদের জন্য। দেশটিতে বিভিন্ন সেক্টরে আমরা কর্মী পাঠাতে পারব। তাদের পূর্বশর্ত হচ্ছে যে, কাজে দক্ষতার পরিচয় দিতে পারলেই যাওয়া সম্ভব দেশটিতে। তাদের এ কর্মসূচির নাম হচ্ছে এসএসডব্লিউ।

তিনি আরও বলেন, আশার কথা হচ্ছে প্রশিক্ষণের পর শ্রমিকদের এ পরীক্ষাটা বাংলাদেশে হতো না, সেটি এখন দেশেই হবে। আমরা আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগ-সমৃদ্ধি ও কর্মপ্রচেষ্টায় এটা শুরু করেছি। আশা করছি, এ মাস থেকে কয়েকটি সেক্টরে পরীক্ষা চালু হচ্ছে। এ মুহূর্তে ১০০ জনের মতো মানুষ যাচ্ছেন জাপানে। ধারাটা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে এবং ক্রমশ বাড়বে। বাজারটা তৈরি করা লোকজনকে জানানো এই উদ্যোগগুলো আমরা অ্যাম্বেসির মাধ্যমে জাপানের বাজারে বাংলাদেশের শ্রমিকদের চাহিদাটা তৈরি করার জন্য কাজ করছি।

এদিকে ২০১৫ সালে করা আরেক সমঝোতা স্বাক্ষরের ভিত্তিতে জাপানের আন্তর্জাতিক মানবসম্পদ উন্নয়ন সংস্থা এমআই জাপান, বিনা খরচে বাংলাদেশি কর্মীদের টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে জাপানে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিচ্ছেন। ভালো বেতনে বাংলাদেশি কর্মীদের সেখানে তিন থেকে পাঁচ বছর কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

So/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে