খামারে ডিমের দাম কমলেও বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। খামারের দাম কমার প্রভাব পড়েনি পাইকারি ও খুচরা বাজারে। ৮ আগস্ট থেকে বাজারে লেয়ার মুরগি, দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দাম বাড়তে শুরু করে। ১২ আগস্ট (শুক্রবার) অস্বাভাবিকভাবে বাজারে ডিমের দাম বেড়ে যায়। প্রতি হালি ডিম ৫৫ টাকায় বেচাকেনা হয়। গ্রামের হাট-বাজারের দোকানে ৬০ টাকা হালিতেও বেচাকেনা হয় ডিম।

খামারিরা জানান, জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মুরগির খাদ্যের দাম আরেক দফা বেড়ে যাবে। খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তাদের জানানো হয়েছে শিগগিরই নতুন বাড়তি দামে খাদ্য কিনতে হবে। বাজারে হঠাৎ করে মুরগির ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে খামারিদের চেয়ে ডিম ব্যবসায়ীরা লাভবান হয়েছেন। খামারিরা প্রতি ডিমে দুই-এক টাকা করে লাভ করলেও ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে চার থেকে পাঁচ টাকা করে লাভ করেছেন।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় পদকপ্রাপ্ত খামারি আকমল হোসেন জানান, ৮ আগস্ট থেকে খামারে ডিমের দাম বাড়তে শুরু করলেও ১৪ আগস্ট থেকে কমতে শুরু করে। ১২ আগস্ট ১০০ ডিম সর্বোচ্চ ১১৩০ টাকা অর্থাৎ এক পিস ডিম ১১ টাকা ৩০ পয়সা দরে বিক্রি হয়েছে। এরপর থেকে প্রতিদিনই ডিমের দাম কমছে। গত ১৫ আগস্ট প্রতি পিস ডিম ১০ টাকা ৩০ পয়সা, ১৬ আগস্ট ৯ টাকা ৯০ পয়সা, ১৭ আগস্ট ৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি হয়েছে।

তিনি বলেন, অথচ ৬ মাস আগেও এককেজি ভুট্টার দাম ছিল ১৭ টাকা এখন কিনতে হচ্ছে ৩৪ টাকায়। সোয়াবিন ছিল ৩৩ টাকা এখন ৬০ টাকা।

দাশুড়িয়া ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের খামারি আব্দুস সালাম জানান, প্রতি পিস ডিম ১০ টাকা বিক্রি করলেও খামারিরা লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পেত। ১০ টাকার কম হলেই খামারিদের লোকসান গুনতে হবে। বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা হালি। অথচ খামারে শুধুমাত্র একদিন সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা হালি দরে ডিম বিক্রি হয়েছে। এখনতো খামারে ডিমের দাম কমে ৩৮ টাকা হালি হয়ে গেছে। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ডিম ৫৫ টাকা হালি। ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামারিদের চেয়ে ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হয়েছে। খাদ্যের দাম বাড়লে কেউ খোঁজ নেয় না এখন ডিমের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে হৈচৈ পড়ে গেছে।

ঈশ্বরদী বাজারের ডিমের আড়তদার শামীম হোসেন জানান, আড়তে ডিম ৫০ টাকা হালি। এখান থেকে ডিম নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা বিভিন্ন দামে বিক্রি করছেন।

খামারে ডিমের দাম কম অথচ আড়তে বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখছেনতো আড়তে ডিম তেমন নেই। বেশি দামে ডিম কিনেতো আর কম দামে বিক্রি করা যায় না। বেশি দামে কিনেছিলাম তাই বেশি দামেই বিক্রি করছি।

বাজারের খুচরা ডিম বিক্রেতা ঝন্টু জানান, আড়ত থেকে প্রতি হালি ডিম কিনেছি ৫০ টাকায়। খুচরা বিক্রি করছি ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, ঈশ্বরদীর খামারগুলোতে ডিমের উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। একইসঙ্গে ডিম ব্যবসায়ীরা ডিমের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। জানতে পেরেছি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে আরেক দফা মুরগির খাদ্যের দাম বাড়ানো হবে।

Jag/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে