অভিমান

………………রোজী খান

একদিন ঘুম ভেঙে ছিল তোমার
সান্নিধ্য পেয়ে আর সেই থেকেই
চলে গেছেআমার কলঙ্কের ভয়,
চৈত্রের খরার মত চৌচির
হয়ে আছে তৃষিত হৃদয়।
চকোরীর মতো চেয়ে থাকি
কেবলি তোমার হাতছানির অপেক্ষায়,
যদি অভয় দাও তবেই পার হবো
মনের অন্ধগলির সরুপথ।
বেলী ফুলের সুবাস নিতে আসবোনা
চাইবো না কোন গোলাপের ঘ্রাণ
চাইবো শুধু সমস্ত প্রণয় তোমার।
মাঝে মাঝে স্বপ্ন ধরার বাহানায়
ছুঁয়ে যাব তোমাকে,
দেখে যাব তোমার চোখে আঁকা
সেরা কোন অপ্সরীর ছবি।
জোছনার মত যদি জলের ঢেউ
ভাসিয়ে নিয়ে যায় তবুও
আমি সম্পূর্ণ তুমিটাকেই চাইবো।
আমি কলঙ্ক বুঝিনা ,অন্ধকার
মানি না; নেই মৃত্যুভয় আমার,
শুধু দুয়ারে এনে-
চলে যেতে বলোনা ।
তোমার নাগাল পেয়ে সেই তো
কবেই আকাশ দেখা ছেড়েছি,
চেয়েছি একটা নিজস্ব আকাশ
ইচ্ছেমতো উড়বো বলে।
নিজস্ব একটা সমুদ্র চেয়েছিলাম
সৈকতে বসে কষ্ট গুলো
ভাসিয়ে দেবো বলে।
একটা খোলা প্রান্তর চেয়েছিলাম
বুক ভরে নিঃশ্বাস নেবো বলে।
বন্ধু হতে চেয়েছিলাম, মনের
কথাগুলো অকপটে বলবো বলে।
এই আমি একাকীত্ব আর শূন্যতার চাদরে
মোড়ানো- তোমাকে তাও বলেছিলাম
তবুও আমার হৃদয়ে স্বপ্ন গেঁথে দিলে।
কেন বোঝনি স্বপ্নগুলো আমার দুঃস্বপ্ন হয়।
তোমার রাজ্যে তাইতো যেতে চাইনি
আমিতো নির্বাসনেই ছিলাম আমার ভুবনে,
কেন দেখালে তোমার হৃদয়ের দহন
সেই দহনে আমিই অঙ্গার হলাম।
কত সহজেই আমার হাতটি ধরেছিলে
নিয়ে গেলে আমায় স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে
তোমার রাজ্যে,পারবে কি তুমি
আমায় একা রেখে চলে যেতে?
যদি তাই করো তবে দৈত্যকে বলে দিও
আমাকে যেন আবার ঘুম পাড়িয়ে দেয়।
আমি তো ঘুমিয়েই ছিলাম,
কেন যে ঘুম ভাঙ্গালে !
আমিতো কণ্টকিত করিনি কারো স্বপ্নের
রাজপথ;অর্পণ করিনি আমার স্বপ্ন,
বহুকাল আগেই আমি নিজেকে
সবার কাছ থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম।
আজ জীবনের শেষ প্রান্তে
নতুন করে চাওয়া-পাওয়ার হিসেব
করতে বসে মনে হলো
চাওয়া গুলো পাওনাই রয়ে গেছে,
তবুও কারো প্রতিই অনুযোগ নেই
যা আছে তা শুধুই অভিমান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে