pm-69

বিডি নীয়ালা নিউজ(২২জানুয়ারি১৬)- সিলেট প্রতিবেদনঃ  ‘নৌকাই শান্তি দেবে, সমৃদ্ধি দেবে। নৌকাই এদেশের মানুষের মুক্তি এনে দেবে।’ এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে সিলেটের ঐতিহাসিক আলীয়া মাদরাসা মাঠে উপস্থিত জনস্রোতের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ‘আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন তো?’

উপস্থিত জনতা নিরাশ করেননি প্রধানমন্ত্রীকে। সবাই উল্লাসে গলা ফাটিয়ে নৌকা-নৌকা চিৎকার করে দুই হাত তুললেন। অঙ্গীকার করলেন আগামী নির্বাচনেও পাশে থাকবেন জনতা।

চলতি মেয়াদে সরকার গঠনের পর বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দ্বিতীয়বার সিলেটে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেট এসে তিনি শাহজালাল, শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারত, মদনমোহন কলেজের হীরকজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগদান, বিভিন্ন উন্নয়নকাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

বিকেল ৪টায় তিনি সিলেটের ঐতিহাসিক আলীয়া মাদরাসা মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি সিলেটবাসীর কাছে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।

আধা ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকা মার্কায় এদেশে স্বাধীনতা পেয়েছেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই আজকে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। কাজেই আগামী দিনেই নৌকা মার্কাকে ভুলবেন না।’

সিলেটবাসীকে ‘প্রিয়’ সম্বোধন করেন শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার কাছে দাবি করা লাগবে না। আমি বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরেছি। এদেশের মানুষের সমস্যা কী আমার জানা। এ দেশের মানুষের   সমাধান কীভাবে করতে হবে? দেশকে উন্নতি কীভাবে করতে হবে, সেটাও আমরা জানি। আর সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। তাই আমার ওপর ভরসা রাখেন।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশ যখন উন্নতির দিকে এগিয়ে যায়, মানুষ যখন সুখে শান্তি থাকে, তখন একজনের মনে খুব অশান্তি দেখা দেয়। তিনি আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারেন, যার হাতে কোনো মানুষের জীবন নিরাপদ নয়।’

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাসের স্থান হবে না। কাজেই আপনারা সজাগ থাকবেন। আপনাদেরও লক্ষ রাখতে হবে, কোনো ছেলে-মেয়ে যেন ওই সন্ত্রাসী জঙ্গিদের কাছে যেতে না পারে।’

‘বিএনপি-জামায়াতের আমল ছিল সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের আমল’ এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমল হচ্ছে উন্নয়ন ও সুশাসনের আমল।’

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন অর্থনৈতিক মন্দা ছিল। কিন্তু আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশের উন্নয়ন করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। আমরা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছি।’

বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে বাংলাদেশ বিমানে লুটপাট করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমান ছিল মরা লাশ। আমরা বিমানে প্রাণের সঞ্চার করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা চালু করেছি। আমরা চাই গরিব মানুষ যাতে কষ্ট না পায়।’

দেশকে আওয়ামী লীগ ডিজিটাল করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার চালু করেছি। ৮ হাজার পোস্ট অফিস ডিজিটাল করেছি। এতে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। আমরা দেশের সর্বত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি। দেশের কেউ বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াবে না।’

সরকারি চাকুরিজীবীদের বেতন ১২৩ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর কোনো সরকারের আমলে এমনটা হয়নি।’

শিক্ষা খাতে সরকার উন্নয়ন করেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১ কোটি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিচ্ছি। বিনামূল্যে মাধ্যমিক পর্যন্ত বই দিচ্ছি। এখন বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেয়ে যায়।’

স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য দেশে শিশু মৃত্যুর হার, মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। আমরা নার্সদের চাকুরির মান উন্নত করেছি। দেশে ১২ হাজার নতুন চিকিৎসক এবং ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। আরো ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেয়া হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হবে।’

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন কামরানের সভাপতিত্বে এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন  আহমদের যৌথ পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে জনসভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে