সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকারঃসিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় বিয়ের দাবিতে সাদ্দাম নামের এক প্রেমিকের বাড়িতে ৮দিন যাবত অনশন করছেন প্রেমিকা আঁখি খাতুন (২২)। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের চৌদুয়ার গ্রামে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিদিন ওই বাড়িতে অনশনরত ওই প্রেমিকাকে দেখতে এলাকাবাসী ভিড় করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৬ বছর আগে চৌদুয়ার গ্রামের আতাহার আলীর ছেলে কৃষক আল-আমিনের সাথে শিয়ালকোল ইউনিয়নের বড় হামকুড়িয়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে আঁখি খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের ১ বছর পর তাদের সংসারে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। এক পর্যায়ে আঁখি খাতুন শ্বশুড়বাড়ির পাশে রফিকুল ইসলাম ওরফে ইসমাইল সরকারের ছেলে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র সাদ্দাম হোসেনের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এরপর দীর্ঘ ৪ বছর ধরে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আঁখির সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে সাদ্দাম।

বিষয়টি জানাজানি হলে সম্প্রতি স্বামী আল-আমিন স্ত্রী আঁখি খাতুনকে তালাক দেয়। পরে, আঁখির পরিবারের পক্ষ থেকে প্রেমিক সাদ্দাম হোসেনের পরিবারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে। এ অবস্থায় প্রেমিক সাদ্দাম নানা টালবাহানার পাশাপাশি অন্যত্র বিয়ে করার চেষ্টা করে। সম্প্রতি এ খবর জানতে পেরে প্রেমিকা আঁখি বিষপান করে। পরিবারের লোকজন তাকে আশংকাজনক অবস্থায় সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। ৪ দিন চিকিৎসা শেষে গত ১৩ জুন মঙ্গলবার সকাল ১০টায় আঁখি খাতুন সুস্থ্য হয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে ওঠে পড়ে। এ সময় চতুর প্রেমিক সাদ্দাম কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেও আঁখি খাতুন বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে অবস্থান নেয়।

সাদ্দামের পরিবারের লোকজন আঁখি খাতুনকে বার বার বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ অবস্থায় আঁখি খাতুন সাদ্দামের সাথে বিয়ে না হলে আত্মহত্যা করবে বলে সাদ্দামের পরিবারকে হুমকি দেয়। এ ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও সাদ্দামের পরিবার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে প্রেমিকা আঁখি খাতুন বলেন, সাদ্দাম হোসেন আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রেম ও দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। সম্প্রতি বিয়ের কথা বললে সে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি স্বামী-সন্তান ছেড়ে সাদ্দামকে ভালবেসেছি। এখন সে আমার সর্বনাশ করে অন্যত্র বিয়ে করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেছে। যে কারণে নিজেই তার বাড়িতে চলে এসেছি।

বিয়ে না করা পর্যন্ত এ বাড়ি থেকে কোনভাবেই ফিরে যাবনা। আর যদি বাড়ি ফিরে যেতেই হয় সেটি আমার লাশ যাবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য হাওয়া বেগম বলেন, চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। কামারখন্দ থানার ওসি বাসুদেব সিনহা বলেন, অনশনের ঘটনাটি শুনেছি। তবে, এখনও কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে