জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ শ্যালকের দায়ের কোপে দুলাভাইয়ের হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সেইসাথে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে তাঁর মা। এ ঘটনায় শ্যালকসহ দুই সহযোগিকে আটক করেছে পুলিশ ।
বুধবার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ডিকসো মোল্লা পাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত মা মোক্তামাইনা বেগম (৪৮) ও ছেলে নুর নবী (৩০) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানায়, ডিকসো মোল্লা পাড়ার হাফিজুল ইসলামের ছেলে নুর নবীর (৩০) সাথে বিয়ে হয় একই উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ার আবেদ আলীর মেয়ে আবেদা খাতুন শিল্পির (২৪)। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ীর সাথে মতবিরোধ চলছিল গৃহবধু শিল্পির।
এনিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যের ঘটনা থানা পর্যন্ত গড়ায়। পরে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে পুলিশ মিমাংসা করে দেয়। পরবর্তীতে আবারো তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে গৃহবধু আবেদা খাতুন দেড় মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যায়। এখনও সেখানে অবস্থান করছে।
এরই জের ধরে আবেদার ভাই আবু সালেহ (২০) তাঁর দুই সহযোগি নুর আমিন (১৮) ও ফিরোজ ইসলামকে (২০) সাথে নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় দুলাভাই নুর নবীর বাড়িতে যায়।
সেখানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আবু সালেহ সাথে থাকা ধারালো দা দিয়ে নুর নবীকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে নুর নবীর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং দুই হাত ও বুকে পিঠে কেটে যায়।
এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হয় মা মোক্তামাইনা বেগম। তাঁদের আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। কিন্তু তার আগেই শ্যালক আবু সালেহ সেখান থেকে সটকে পড়ে। তবে গ্রামবাসী দুই সহযোগিকে ধাওয়া দিয়ে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করে।
আটককৃত নুর আমিন উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের হাজীপাড়ার মৃত বুলু মামুদের ছেলে। সে শহরের একটি হার্ডবোট কারখানার শ্রমিক।
এবং ফিরোজ ইসলাম ওই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে। সে পেশায় ভ্যানচালক।
এদিকে স্থানীয়রা আহত মা ও ছেলেকে প্রথমে সৈয়দপুর ১০ শয্যা হাসপাতালে নেয়।
পরে তাঁদের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করাব হয়েছে। আর বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ঢেলাপীর হাট এলাকা থেকে শ্যালক আবু সালেহকে আটক করে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ৬ জনকে আসামী করে একটি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের নীলফামারী আদালতে পাঠানো হয়েছে। (ছবি আছে)